সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের বিশেষ বৈঠক আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। গতকাল শুক্রবার ওই দুই দেশের নেতা এ আহ্বান জানান। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বলেন, দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আসিয়ানের প্রধানের সঙ্গে কথা বলে মিয়ানমারের বিষয়ে একটি বিশেষ বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করতে বলা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া সফরে আছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন। তিনি বলেন, এই অভ্যুত্থান দেশটিতে (মিয়ানমার) গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার পথে এক পা পিছিয়ে যাওয়া। গত সোমবার আসিয়ান সদস্যভুক্ত দেশ মিয়ানমারে সেনাঅভ্যুত্থান ঘটে। ক্ষমতাসীন বেসামরিক এনএলডি সরকারকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং মিয়ানমার জুড়ে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করে। অর্ধশতাব্দীর বেশি সময়ের সামরিক শাসনের পর ২০১১ সাল থেকে গণতন্ত্রের পথে ফেরা শুরু করেছিল মিয়ানমার। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ২০১৫ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি-এনএলডি। সাংবিধানিকভাবে প্রভাবশালী দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই এতদিন দেশ পরিচালনা করছিল সু চির দল। কিন্তু ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের ফল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। ওই নির্বাচনে সু চির দল ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়। সেনাসমর্থিত বিরোধী দল থেকে ভোটে ‘প্রতারণার’ অভিযোগ তুলে নতুন করে ভোট আয়োজনের দাবি জানানো হয়।
এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। বন্দি করা হয় সু চি এবং প্রেসিডেন্ট উয়িন মিন্টকে। আন্তর্জাতিক মহল থেকে এ অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে দ্রুত সু চি এবং আটক অন্যান্য নেতাদের মুক্তি দিতে বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বলেছেন।