আশানুরূপ পর্যটক নেই কক্সবাজারে

থার্টি ফার্স্ট নাইট ও বর্ষবরণ

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শনিবার , ১ জানুয়ারি, ২০২২ at ৬:২৯ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারে থার্টি ফার্স্ট নাইট ও বর্ষবরণ উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ফলে সৈকতের উন্মুক্ত স্থানে বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল না। তাই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে আশানুরূপ পর্যটক আসেনি। এতে কক্সবাজারের সাড়ে চার শতাধিক হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউসে অর্ধেকেরও বেশি কক্ষ ফাঁকা ছিল। তবে নিয়মরক্ষায় তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইজ, সায়মন বীচ রিসোর্ট, কক্স-টু-ডে এবং সী পার্ল বিচ রিসোর্ট এন্ড স্পা’র নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ইনডোর প্রোগ্রাম আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। হোটেলের অতিথি, বিদেশি পর্যটক এবং বিশেষ মেহমান ব্যতিত এসব অনুষ্ঠানে অন্যদের শরিক হবার তেমন সুযোগ নেই।
কঙবাজারের তারকা হোটেল ওশ্যান প্যারাডাইসের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু বলেন, পর্যটন বিকাশে আমরা শুরু থেকেই বাংলা নববর্ষ, থার্টি ফার্স্ট নাইটসহ নানা দিবসকে পর্যটকদের কাছে উপভোগ্য করে তুলি। পর্যটক চাহিদার কারণে এবারো বলরুমে ইনহাউজ গেস্টদের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। ব্যুফে ডিনারের সাথে ছাদে থাকছে স্ট্যাজ প্রোগ্রাম। সায়মন বীচ রিসোর্টের হিসাব ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান নূর জানান, বিদেশি ও ইনহাউজ অতিথিদের জন্য ব্যুফে খাবার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে কর্তৃপক্ষ। অন্য সময় বাইরের অতিথি ব্যুফে খেতে আসতে পারলেও থার্টি ফাস্ট নাইটের অনুষ্ঠান বাইরের অতিথির প্রবেশ বন্ধ থাকবে। আরেক তারকা হোটেল দ্য কঙ-টু-ডে’র ব্যবস্থাপক আবু তালেব বলেন, উল্লেখ করার মতো কোর আয়োজন নেই। তবে, অতিথিদের জন্য লবিতে ঘরোয়া পার্টির আয়োজন থাকছে।
কঙবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, নানা কারণে সরকার এবারও ‘থার্টি ফাস্ট নাইটে’ ওপেন অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। তবে পর্যটকরা চাইলে গভীর রাত পর্যন্ত বীচে ঘুরতে পারবেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বেশ কয়েকটি টিম মাঠে থাকবে। কিন্তু রাত দশটার পর হোটেলের সব বার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ডিসি বলেন, কোন হোটেল-মোটেল ইনডোর প্রোগ্রামের জন্য জেলা প্রশাসনে অনুমতি নেয়নি। এরপরও নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ইনডোর প্রোগ্রাম করলে নিরাপত্তার বিষয়টি সম্পূর্ণ তাদের নিজস্ব এখতিয়ার। কোথাও থেকে অপ্রীতিকর কোন ঘটনার অভিযোগ এলে হোটেলটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দু’মিনিটও চিন্তা করবে না প্রশাসন। কঙবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনে কোন আতশবাজি, পটকা ফুটানো বা কোন উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান করা যাবে না। পাশাপাশি রাত ১২টার পর উচ্চস্বরে কোন মাইক কিংবা সাউন্ড বাজানো নিষেধ। থার্টি ফাস্ট নাইট ও বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে জেলা পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা শুরু হয়ে অব্যাহত থাকবে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
হোটেল মোটেলে চাপ নেই : অন্যান্য বছর এই দিনে কঙবাজারের চার শতাধিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউসে পর্যটকের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হলেও এবারে তেমন চাপ নেই বললেন সংশ্লিষ্টরা। কঙবাজার কলাতলীর হোটেল কঙ-ভিউ রিসোর্টের জেনারেল ম্যানেজার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য বছর এই দিনে শতভাগ বুকিং হলেও আজ অর্ধেকের বেশি কক্ষ ফাঁকা।
কলাতলীর হোটেল সী উত্তরার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. ওসমান গনি বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের চিত্র ভিন্ন। পুরো কঙবাজারের কোন হোটেল মোটেল গেস্ট হাউসে আশানুরূপ পর্যটক নেই। কঙবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, বাস্তবতায় কঙবাজারে কিন্তু পর্যটকদের নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা নেই।
কঙবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, থার্টি ফাস্ট নাইটকে কেন্দ্র করে সমুদ্র সৈকত ছাড়াও আশপাশের যেসব পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে সেখানেও ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎপরতা আগের চেয়েও বাড়ানো হয়েছে। পর্যটকেরা যেন নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবছরের শুরুতেই সঙ্গী হচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ
পরবর্তী নিবন্ধফুল বিক্রিতে মেলেনি কাঙ্ক্ষিত সাড়া