আলোচনা চাইলে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও হামলার চিন্তা ছাড়তে হবে, বললেন ইরানি মন্ত্রী

| মঙ্গলবার , ১ জুলাই, ২০২৫ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

কূটনৈতিক আলোচনা পুনরায় শুরু করতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানে আরও হামলার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তাখ্‌তরাভাঞ্চি। খবর বিডিনিউজের।

বিবিসিকে তিনি বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে ইরানকে জানিয়েছে যে তারা এই সপ্তাহেই ফের আলোচনা শুরু করতে চায়। কিন্তু আলোচনা চলার সময় আরও হামলা হবে কিনা, খুবই গুরুত্বপূর্ণ এ প্রশ্ন নিয়ে সুস্পষ্ট জবাব দেয়নি তারা। চলতি মাসে ইসরায়েল যখন আচমকা ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, তখনও তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আলোচনা চলছিল। ইসরায়েলি হামলার পাল্টায় পরে ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে জবাব দেয়। ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা মেরে যুক্তরাষ্ট্র ২১ জুন এই সংঘাতে সরাসরি যুক্ত হয়ে পড়ে। এর পাল্টায় তেহরান কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। তারপর তড়িঘড়ি ইসরায়েলইরানের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি হলে পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হয়ে আসে।

তাখ্‌তরাভাঞ্চি বলছেন, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার যে অধিকার রয়েছে, তাতে অটল থাকবেন তারা। তেহরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর পথে অগ্রসর হচ্ছে, এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, গবেষণার জন্যও ইরানকে পারমাণবিক উপাদান পেতে দেওয়া হয়নি, তাই আমাদেরকে নিজেদের ওপরই নির্ভর করতে হয়েছে। এখন সেটার মাত্রার কী হবে, সক্ষমতা কেমন থাকবে সেগুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

কিন্তু কেউ যদি বলে, তোমরা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না, শূন্য সমৃদ্ধ থাকতে হবে, আর যদি রাজি না হও তাহলে আমরা বোমা মারবো, তবে তো সেটা জঙ্গলের আইন হল। ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কাছাকাছি পৌঁছে গেছ্তেএমন দাবি করে গত ১৩ জুন শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনার পাশাপাশি ইসরায়েল তেহরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ও বিজ্ঞানীদেরও হত্যা শুরু করে।

এর বদলায় ইরানও পাল্টা হামলায় নামলে দুই পক্ষ টানা ১২ দিন ধরে একে অপরের বিভিন্ন স্থাপনায় আকাশপথে হামলা চালাতে থাকে। এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রর ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনাফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্ফাহানে বোমা ফেলে। এই বোমায় ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি গুঁড়িয়ে গেছে বলে ট্রাম্প দাবি করলেও আদৌ কতটুকু ক্ষতি হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তাখ্‌তরাভাঞ্চিও বলছেন, তিনি এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে পারছেন না।

এদিকে জাতিসংঘের ওয়াচডগ আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও সেগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি কয়েক মাসের মধ্যে ফের শুরু করার সম্ভাবনা ইরান রাখে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।

এ প্রসঙ্গে ইরানি উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, সেরকমটা আদৌ হবে কিনা, তা তিনি জানেন না। আইএইএর সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক ক্রমশ পড়তির দিকে। জাতিসংঘের এ সংস্থাটি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী অভিযোগ করে বুধবার শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির পার্লামেন্ট এ আনবিক ওয়াচডগের সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের একটি পদক্ষেপের পক্ষে সায়ও দিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ২৫.৮০ কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধইসরায়েলের উপর্যুপরি হামলায় ঘরছাড়া শত শত ফিলিস্তিনি পরিবার