দেখতে দেখতে দুই বছর চলে গেল বিশিষ্ট অভিনেতা, প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব আলী যাকের আমাদের মধ্যে নেই। ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার রতনপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন আলী যাকের। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই নাট্যচর্চা শুরু করেছিলেন আলী যাকের। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে আরণ্যকের ‘কবর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এরপর নাগরিক নাট্য সমপ্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত হন এবং মৃত্যুর আগে এই নাট্যদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। খবর বাংলানিউজের।
মঞ্চে নূরলদীন, গ্যালিলিও ও দেওয়ান গাজীর চরিত্রে আলী যাকেরের অভিনয় এখনও দর্শক মনে রেখেছে। ‘বহুব্রীহি’, ‘তথাপি পাথর’, ‘আজ রবিবার’এর মতো টিভি নাটকে অভিনয় করেও তিনি প্রশংসা পেয়েছেন।
‘অচলায়তন’, ‘বাকী ইতিহাস’, ‘সৎ মানুষের খোঁজে’, ‘তৈল সংকট’, ‘এই নিষিদ্ধ পল্লীতে’, ‘কোপেনিকের ক্যাপ্টেন’সহ বেশ কয়েকটি মঞ্চ নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন আলী যাকের। বেতারে অর্ধশতাধিক শ্রুতি নাটকেও কাজ করেছেন। অভিনয়, নির্দেশনার বাইরে তিনি ছিলেন একজন নাট্যসংগঠক, পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন লেখালেখির সঙ্গে।
দীর্ঘ কর্মজীবনে সংস্কৃতি অঙ্গনে অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন আলী যাকের। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি আলী যাকের যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটিরও সদস্য ছিলেন। আলী যাকেরের স্ত্রী সারা যাকেরও মঞ্চ আর টেলিভিশনের এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তাদের বিয়ে হয় ১৯৭৭ সালে। তাদের দুই ছেলেমেয়ে ইরেশ যাকের ও শ্রিয়া সর্বজয়াও অভিনয়শিল্পী।