আরও বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম

পাম তেলে বেড়েছে মণে ৮০০ টাকা, সয়াবিন ৭০০

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৯ এপ্রিল, ২০২২ at ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ

ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে সরকার দুই দফায় ৩০ শতাংশ ভ্যাট মওকুফ করে। ভ্যাট মওকুফের প্রভাবে পাম ও সয়াবিন তেলের দাম কমলেও গত দুই সপ্তাহ ধরে ঊর্ধ্বমুখী বাজার। এই সময়ের পাম তেলের দাম বেড়েছে মণে ৮০০ টাকা এবং সয়াবিনের দাম বেড়েছে মণে ৭০০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এখনো ভোজ্যতেলের বাজার চড়া। প্রতিদিনই বুকিং দর অল্প অল্প করে বাড়ছে। দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের বাজারে সয়াবিন ও পাম উভয় তেলের দাম স্থির থাকছে না। তবে ভোক্তারা বলছেন, দেশে সয়াবিন তেলের মিল রয়েছে হাতেগোনা। প্রশাসন সঠিকভাবে নজরদারি করলে দাম বাড়ার কথা না। কারণ বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার ইতোমধ্যে ভ্যাট মওকুফ করেছে। কিন্তু ভ্যাট মওকুফের কার্যত কোনো ধরনের সুফল ভোক্তারা পাচ্ছেন না।

গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহ আগে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ১০০ টাকায়। বর্তমানে ৮০০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৯০০ টাকায়। অন্যদিকে একই সময়ে প্রতি মণ সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে মণপ্রতি ৫ হাজার ৭০০ টাকায়, বর্তমানে মণপ্রতি ৭০০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৪০০ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের কয়েকজন তেল ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবেও স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ। তেল কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে তেল ও চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়। বলা যায় ডিও কারসাজির কারণে মাঝে মাঝে পণ্যের দাম আকাশচুম্বি হয়ে উঠে। এই সুযোগে কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমাদের জানা মতে, ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় আমাদের দেশের বাজার এখনো কম আছে। এখন অনেকে আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে বাজারে সরবরাহ সংকট দিয়ে দিয়েছে বলে জেনেছি। আমাদের দেশের ভোজ্যতেলের বাজার আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি পেলে সেই প্রভাব দেশের বাজারেও পড়বে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিল্পাঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়
পরবর্তী নিবন্ধ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ স্থাপনা উচ্ছেদে জেলা প্রশাসনকে ফের বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠি