আরএসআরএম’র মাকসুদসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

চিকিৎসার নামে দেশত্যাগের অপকৌশল নিয়েছেন মালিকরা : ব্যাংক

হাবীবুর রহমান | শুক্রবার , ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ১১:১০ পূর্বাহ্ণ

ব্যাংকে কোনো ধরনের জামানত ছাড়া শুধুমাত্র পার্সোনাল গ্যারান্টি এবং ট্রাস্ট রিসিটে নেয়া প্রায় ২০০ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করছে না আরএসআরএম। ব্যাংক বলছে, ঋণ পরিশোধে কোনো রকম সদিচ্ছাও দেখায়নি আরএসআরএম। বরং চিকিৎসার নামে দেশত্যাগের অপকৌশল নিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মালিকরা। অন্যদিকে আরএসআরএম’র আইনজীবীর দাবিরাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা হয়নি। এ জন্য ঋণ পরিশোধে ব্যত্যয় হয়েছে। ব্যাংক ও আরএসআরএম’র বিপরীতমুখী এমন অবস্থার প্রেক্ষিতে আরএসআরএম’র চার মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তারা হলেন, আরএসআরএম’র মালিক মাকসুদুর রহমান, তার ছেলে মিজানুর রহমান, মারজানুর রহমান ও মো. আলাউদ্দিন নামে তাদের অংশীদার। গতকাল চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম আজাদীকে বলেন, ট্রাস্ট ব্যাংক সিডিএ এভিনিউ শাখা আরএসআরএম’র মালিকদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি চেয়ে আবেদন করে। অন্যদিকে আরএসআরএম’র আইনজীবী সময় চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আরএসআরএম’র চার মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

আদালত সূত্র জানায়, ব্যাংকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ১৮৮ কোটি ২৬ লাখ ৫৩ হাজার ৩০৭ টাকা খেলাপি ঋণের বিপরীতে কোনো স্থাবর সম্পত্তি ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ নেই বিবাদীদের। পার্সোনাল গ্যারান্টি এবং ট্রাস্ট রিসিটের উপর ভিত্তি করে উক্ত ঋণ বিতরণ করা হয়। বিভিন্ন সময় ঋণ পুণঃতপশীল, পুনর্গঠন এবং পুনর্বিন্যাস সুবিধা দেওয়া হলেও বিবাদীরা ঋণ পরিশোধে কোনো সদিচ্ছা দেখাননি। বিআরপিডি সার্কুলারের আওতায় ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ১০ বছর মেয়াদে ঋণ পরিশোধের সুবিধার জন্যও আবেদন করেননি। বিবাদীরা ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি উল্লেখ করে আবেদনে বলা হয়, জাতীয় সংসদে ঘোষিত শীর্ষ ২০ ঋণ খেলাপির মধ্যে মাকসুদুর রহমান অন্যতম। তার কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাওনা প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। ঋণ গ্রহণের কথা স্বীকার করলেও ঋণ পরিশোধের জন্য মেডিয়েশন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন না। বরং চিকিৎসার নামে দেশত্যাগের অপকৌশল নিয়েছেন।

আরএসআরএম’র আইনজীবী আদালতকে বলেন, মাকসুদুর রহমান দেশের ইস্পাত খাতের একজন শীর্ষ উদ্যোক্তা। ইস্পাত শিল্প খাতের বিকাশে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। মূলত রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কাঁচামাল সংগ্রহে বিঘ্ন ঘটায় বিবাদীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন ব্যাহত হয়। তাই বিবাদীরা যথাসময়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি। বর্তমানে মাকসুদুর রহমান শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিংগাপুর যাওয়া জরুরি উল্লেখ করে বলা হয়, মিজানুর রহমান হচ্ছেন মাকসুদুর রহমানের ছেলে। তাই মেডিকেল এটেনডেন্ট হিসেবে মিজানুর রহমানকে মাকসুদুর রহমানের সঙ্গী হওয়া আবশ্যক। বিবাদীরা দেশত্যাগ করবেন না। বিবাদীরা ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিও নন। প্রায় ২০০ কোটি টাকা খেলাপি হওয়ায় ট্রাস্ট ব্যাংক সিডিএ এভিনিউ শাখা গত বছর মামলাটি দায়ের করে উল্লেখ করে বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বলেন, আদালত ব্যাংকের আবেদন গ্রহণ এবং আরএসআরএম’র আবেদন প্রত্যাখ্যান করে আদালত চার ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। মডার্ন স্টিল মিলস লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের নামেই তারা উক্ত ঋণ নিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুই সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা এমপি মোতালেবের
পরবর্তী নিবন্ধআমতলে পাঞ্জাবি বিক্রয়কেন্দ্রের গোডাউনে আগুন