আমাদের দেশ নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন : কাদের

| সোমবার , ২১ আগস্ট, ২০২৩ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো কেন ‘মাথা ঘামাচ্ছে’ তা ‘বুঝতে পারছেন না’ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ২০২২টি দেশে এ বছর ইলেকশন হচ্ছে। কিন্তু কোথায় কারও কোনো কথা, কোথাও ইলেকশন নিয়ে বা অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কোনো কথা নেই। একুয়েডরের প্রেসিডেন্ট ক্যানডিডেটকে মেরে ফেলেছে। এইসব নিয়ে তো কেউ কোনো কথা বলে না; বড় বড় দেশ, শক্তিগুলো। আমাদের দেশ নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন? কারণটা কী, আমরা তো বুঝি না। তবে ভূরাজনৈতিক কারণে কৌশলগতভাবে বাংলাদেশ নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ থাকবে বলে মনে করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা কাদের। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ এই দুই দেশের ‘মাঠের লড়াইয়ে’ পরিণত হচ্ছে কিনাসংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, কেন তা হবে? বাংলাদেশের ইলেকশন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখন বিভিন্ন দেশের এ অঞ্চলকে ঘিরে জিওপলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজি আছে। সেখানে আমেরিকার একটা ইন্টারেস্ট আছে, ভারতেরও আছে। থাকাটা খুব স্বাভাবিক। ওদিকে চীন আছে, একটা বড় শক্তি। খবর বিডিনিউজের।

বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনের দিনতারিখ জানাতে গতকাল সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন সেতুমন্ত্রী। সেখানে নির্বাচন ও বিদেশি তৎপরতা নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘তৎপর’ যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনীতিকরা। আসন্ন নির্বাচন ‘সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য’ হওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন তারা।

জাতীয় নির্বাচনের বাকি আর চার মাস। এই সময়টা সরকারের জন্য ‘চ্যালেঞ্জিং’ বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জিং, তবে আমরা মনে করি রাজনীতিতে, রাষ্ট্রীয় জীবনে, ব্যক্তিগত জীবনে কোনো চ্যালেঞ্জই অনতিক্রম্য নয়, সব চ্যালেঞ্জই অতিক্রম করা যায়, ইনলাশ্লাহ আমরা অতিক্রম করব।

দেশের অভ্যন্তীরণ বিষয়ে ‘বিদেশি হস্তক্ষেপ’ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা তাদের কথা বলুক, আমরা আমাদের কাজ করব। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের জনগণের কাছে আমাদের প্রতিশ্রুতি, আমরা ফেয়ার ইলেকশন করব, ফ্রি ইলেকশন করব। আমরা পিসফুল ইলেকশন করব, সেটা আমাদের ইন্টারনাল বিষয়। আমাদের নিয়মটা আছে, আমাদের সংবিধান। যেভাবে গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে ইলেকশন হবে আমরা তার বাইরে যাচ্ছি না। আমরা বরং আমাদের ইলেকশন কমিশনকে ইন্ডিপেনডেন্ট করেছি। বর্তমানে ইলেকশন কমিশন ইন্ডিপেনডেন্ট। এটা প্রাইম মিনিস্টার অফিসের সাবসার্ভিয়ান কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। সে অবস্থায় ইলেকশন হতে অসুবিধা কোথায়?

কাদের বলেন, আমাদের ইলেকশন নিয়ে অন্য কারও মাথাব্যথা। ভারত গতকাল আমেরিকাকে তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তারা তাদের ওপিনিয়ন জানিয়েছে। (ভারত) আমাদেরকে কখনও বলেনি তোমার ইলেকশনে সেই কর, তত্ত্বাবধায়ক আন, ইলেকশন সিস্টেমএসব কথা আমেরিকাও বলেনি।

তিনি বলেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কখনও এসব বলেনি। বিএনপি যে দাবিগুলো নিয়ে আজকে গো ধরেছে, এগুলো করতেই হবে, তা না হলে ইলেকশন নয়সেই দাবিগুলোর ব্যাপারে কিন্তু আমেরিকাও এযাবৎ কিছু বলেনি। আমি পারসোনালি জিজ্ঞেস করেছি আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কেউই বলেনি যে তত্ত্বাবধায়কের দরকার আছে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করতে হবে। তাদের দেশে এটা নেই, দুনিয়ার কোথাও নেই, কেন বাংলাদেশে হবে?

বিদেশিদের তৎপরতা নিয়ে আরেক প্রশ্নে কাদের বলেন, আপনি রাতে ঘুমিয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলাতে কচলাতে নাস্তা করার আগে দুয়েকটা দূতাবাসে ছুটে যান। এটা তো আপনি করেন, আমরা তো করি না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের কাছে সময় চেয়েছে, আমরা তাদের সময় দিয়েছি। আমরা রবাহূতের মতো ওখানে যাইনি। আমেরিকান অ্যাম্বাসেডর লাঞ্চের দাওয়াত দিয়েছে, আমরা সে লাঞ্চের দাওয়াতে গিয়েছি, কথাবার্তা বলেছি। আমি স্পেসিফিকালি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে জিজ্ঞেস করেছিলাম তিন বিষয়ে (বিএনপির তিন দাবি) আপনার মতামত কী? তিনি বলেছেন, এসব বিষয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনতুন চ্যাম্পিয়ন স্পেন
পরবর্তী নিবন্ধশেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ভয়ংকর ২১ আগস্ট