গবেষণা প্রবন্ধে চৌর্যবৃত্তির জন্য শাস্তিপ্রাপ্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিয়া রহমান দাবি করেছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট শাস্তি ঘোষণার এক মাসের বেশি সময় পর গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলন এসে এই দাবি করেন তিনি। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এই শিক্ষক বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মিথ্যা চিঠির উপর ভিত্তি করে’ তাকে ফাঁসানো হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির প্রমাণ পেয়ে গত ২৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সামিয়া রহমান এবং ওই গবেষণায় তার সহযোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের পদাবনতি করে। সামিয়াকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে এক ধাপ নামিয়ে সহকারী অধ্যাপক করা হয় এবং আগামী দুই বছর তিনি পদোন্নতির আবেদন করতে পারবেন না। অন্যদিকে শিক্ষা ছুটি থাকা মারজানকে চাকরিতে যোগদানের পর দুই বছর একই পদে থাকতে হবে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া রহমান ও মারজানের যৌথভাবে লেখা ‘এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার : এ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ শিরোনামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ’ জার্নালে প্রকাশিত আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধে চৌযবৃত্তির জন্য তাদের এই শাস্তি দেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন সামিয়া। তার সঙ্গে ছিলেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, আইনজীবী তুরিন আফরোজ। সামিয়ার স্বামী সৈয়দ ফিরোজ আহমেদ ও তার বন্ধু মিলু এইচ রহমানও সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন।
সামিয়া বলেন, প্রতিহিংসা আর বিশ্ববিদ্যালযয়ের শিক্ষক রাজনীতির নোংরামীর চরম শিকার হলাম আমি। গত ৪ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের চাপে ও তদন্তাধীন বিষয় বলে মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলাম। তার সুযোগে ষড়যন্ত্রকারীরা দিনের পর দিন প্রপাগান্ডা চালিয়েছে আমার বিরুদ্ধে। অবশ্যই বাংলাদেশের আদালতের উপর সম্পূর্ণ আস্থা রেখে আদালতেই যাচ্ছি। চার বছর আগে সামিয়া ও মারজানের ওই প্রবন্ধ প্রকাশের পর অভিযোগ ওঠে, এটি ১৯৮২ সালের শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল ‘ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি’তে প্রকাশিত ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নামের একটি নিবন্ধ থেকে প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা হুবহু নকল।