আমনের ফলন ভালো হলেও প্রভাব নেই চালের বাজারে

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২১ নভেম্বর, ২০২০ at ৪:৩৪ পূর্বাহ্ণ

কৃষকের ঘরে উঠতে শুরু করেছে আমন ধান। ধানের দামও কমেছে। অথচ নতুন ধানের কোনো প্রভাব নেই চালের বাজারে। উল্টো কয়েক ক্যাটাগরির সরু চালের দাম বস্তাপ্রতি বেড়েছে ১শ টাকা। চালের আড়তদাররা বলছেন, অন্যান্য বছরগুলোতে কৃষকের ঘরে ধান উঠার প্রভাব চালের বাজারে পড়তো। তবে এবছরের পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। ধানের ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। তারপরেও কমছে না চালের দাম। উত্তরাঞ্চলের মোকামগুলোতে এখনো উচ্চমূল্যে চাল বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর চালের আড়ত চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সিদ্ধ, বাসমতি সিদ্ধ, স্বর্ণা সিদ্ধ, বেতি, পাইজাম আতপ, মিনিকেট আতপ, কাটারীভোগ আতপ ও মোটা সিদ্ধ চালের দাম গত দুই সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। তবে নাজিরশাইল সিদ্ধ, জিরাশাইল সিদ্ধ এবং মিনিকেট সিদ্ধের দাম বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে ১শ টাকা পর্যন্ত। চালের আড়তদাররা জানান, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে জিরাশাইল সিদ্ধ বস্তায় ১৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ টাকায়। এছাড়া মিনিকেট সিদ্ধ ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৫৫০ টাকা এবং মিনিকেট সিদ্ধ ৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকায়। অন্যদিকে পাইজাম সিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা এবং স্বর্ণা সিদ্ধ ২ হাজার ৩০০ টাকা, মিনিকেট আতপ ২ হাজার ৪৫০ টাকা, বেতি আতপ ২ হাজার ৩৫০ টাকা এবং পাইজাম আতপ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২৫০ টাকা এবং মোটা সিদ্ধ প্রতি বস্তায় বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায়।
পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, নতুন ধান উঠার পরেও উত্তরাঞ্চলের মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়া সরকার সরু চালের দাম বস্তাপ্রতি নূন্যতম ২ হাজার ৫৭৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয়ার কারণেও প্রভাব পড়েছে। এখন তো কোনো সংকট থাকার কথা না। এখন দাম নিম্নমুখী থাকবে এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা সেটি দেখতে পাচ্ছি না।
চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম দৈনিক আজাদীকে বলেন, চালের দাম এই সময়ে না কমাটা অস্বাভাবিক। এমনকি ধানের দামও প্রত্যাশিতভাবে কমেনি। গত বছর এই সময়ে প্রতি মণ ধান ছিল ৭০০-৮০০ টাকায়। কিন্তু সেই ধান এখন বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ টাকায়। এটা হতে পারে কৃষকরা ধান সংরক্ষণ করে রেখেছেন বেশি দামে বিক্রির আশায়। সরকারের ধান চাল প্রকিউরমেন্টের কারণেও হতে পারে।
উল্লেখ্য, আমন মৌসুমে দুই লাখ মেট্রিক টন ধান, ছয় লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। প্রান্তিক কৃষক ও অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান, ৩৭ টাকা কেজি দরে সিদ্ধ চাল এবং ৩৬ টাকা কেজিতে আতপ চাল কেনা হবে বলে গত ২৮ অক্টোবর সচিবালয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে গত ৭ নভেম্বর থেকে ধান এবং ১৫ নভেম্বর থেকে সিদ্ধ ও আতপ চাল সংগ্রহ শুরু হয়। যা চলবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এর আগে গত বছর আমন মৌসুমে ২৬ টাকা দরে ৬ লাখ মেট্রিক টন আমন ধান, ৩৬ টাকা দরে ৩ লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৩৫ টাকা দরে ৪৩ হাজার ৪০১ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ করেছিল সরকার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমেরিকায় টিকার আপদকালীন ব্যবহারের আবেদন জানাল ফাইজার
পরবর্তী নিবন্ধফখরুলের স্ববিরোধী বক্তব্যের কারণ খোঁজা প্রয়োজন : তথ্যমন্ত্রী