দুই সপ্তাহ না ঘুরতে আবারও চট্টগ্রাম কাস্টমসে ই-পেমেন্টে ভোগান্তিতে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল সকাল ১০টায় ই-পেমেন্ট করেও দিনভর শুল্ক আদায়ের কনফারমেশন ম্যাসেজ পাননি। কেউ কেউ সন্ধ্যায় ম্যাসেজ পেয়েছেন, ততক্ষণে পণ্য খালাস নেয়ার সুযোগও শেষ হয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পুরো সিস্টেমটাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ না করে এভাবে ই-পেমেন্ট বাধ্যতামূলক করা মোটেও ভালো সিদ্ধান্ত নয়।
আরটিজিএস (রিয়েলটাইম গ্রস সেটেলমেন্ট) গেটওয়ের মাধ্যমে আমদানি রপ্তানিকারকদের ইউজার আইডি দিয়ে শুল্ক পরিশোধ কয়েক সেকেন্ডে হয়ে যাওয়ার কথা। অথচ ই পেমেন্ট এখন ই-ভোগান্তিতে রূপ নিয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তারা বলছেন, ই-পেমেন্টের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সার্ভারের সাথে ব্যাংকের সার্ভার সংযুক্ত থাকে। তবে কোন একটি সার্ভারের ত্রুটি দেখা দিলে সমস্যা হতে পারে। বিষয়টি পুরোপুরি টেকনিক্যাল। জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ে গতিশীলতা আনতে এনবিআর চলতি বছরের পহেলা জুলাই থেকে ই-পেমেন্ট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে। দুই লাখ টাকার বেশি শুল্ক-কর, ফি, চার্জ এই মাধ্যমে আদায় করতে দেশের সবগুলো কাস্টম হাউসকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কাস্টম হাউসগুলোও সেভাবে শুল্ক-কর আদায় শুরু করে। এ সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তি কাস্টমসের ওয়েবসাইটে দৃশ্যমান রয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নির্দেশনা মোতাবেক বাণিজ্য সহজীকরণের অংশ হিসাবে এনবিআর গত ২০১৭ সাল থেকে ই-পেমেন্ট সিস্টেম চালু করে। এ পদ্ধতিতে আমদানিকারক বা তার মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি ট্রেজারিতে শুল্ক-করের অর্থ পরিশোধ করতে পারেন। তবে আগে পদ্ধতিটি বাধ্যতামূলক না করার ফলে আশানুরূপ সুফল পাওয়া যায়নি।
ই-পেমেন্টে ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম রাব্বীন রিগ্যান দৈনিক আজাদীকে বলেন, সাধারণত আগের নিয়মে আমরা ব্যাংক থেকে পে অর্ডারের মাধ্যমে শুল্ক জমা দিলে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগতো। এখন দুই লাখ টাকার বেশি শুল্ক কর ই-পেমেন্ট বাধ্যতামূলক করার কারণে আমরাও ই-পেমেন্ট করছি। কিন্তু এই ই-পেমেন্ট বর্তমানে দুর্ভোগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি আজ (গতকাল) ই পেমেন্ট করেছিলাম ১০টা ৩৯ মিনিটে কিন্তু শুল্ক আদায়ের কনফারমেশন পেয়েছি সন্ধ্যা ৭ টায়। ফলে আমি প্রযুক্তিগত সমস্যায় পণ্য খালাস করতে পারিনি। আমাদের একটাই প্রশ্ন- ই-পেমেন্টের এমন ই-ভোগান্তি থেকে আমাদের মুক্তি কখন মিলবে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী প্রোগ্রামার মোহাম্মদ মোরশেদ আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, কিছু কিছু পেমেন্টে সমস্যা হয়েছে। তবে বড় বড় পেমেন্টগুলো হয়ে গেছে। যেগুলো হয়নি সেগুলো বিকেলের মধ্যে সেটেলমেন্ট হয়ে গেছে। বিষয়টি আসলে এনবিআর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার সংক্রান্ত। আমরা এখান থেকে বসে মূল কি সমস্যা সেটি বলতে পারবো না।