আবদুল কাদির – বিশিষ্ট কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও সম্পাদক। ছান্দসিক কবি হিসেবে তিনি সমধিক পরিচিত। বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা এবং সাহিত্য পত্রিকা শিখা’র অন্যতম প্রকাশক ও লেখক ছিলেন।
আবদুল কাদিরের জন্ম ১৯০৬ সালের ১ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরাইসিধা গ্রামে। ১৯২৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেন তিনি। কর্মজীবনের শুরু কলকাতায় ‘সওগাত’ পত্রিকায় সম্পাদনা বিভাগে চাকরির মধ্য দিয়ে। পরবর্তী সময়ে কিছুকাল কলকাতা করপোরেশন স্কুলে চাকরি করলেও সম্পাদনা ও সাহিত্যচর্চা ছিল তাঁর মৌলিক আকর্ষণ।যুক্ত ছিলেন ‘নবশক্তি’, ‘যুগান্তর’ নজরুল সম্পাদিত ‘নবযুগ’ সহ বিভিন্ন পত্রিকারসম্পাদনার কাজে। পাশাপাশি ‘সওগাত’, ‘মোহাম্মদী’, ‘নবশক্তি’ প্রভৃতি পত্রিকায় নিয়মিতভাবে তাঁর কবিতা প্রকাশিত হতে থাকে। দীর্ঘকাল কবি পাকিস্তান সরকারের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগে কাজ করেছেন। প্রায় এক যুগ তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছে সরকারি সাময়িক পত্র ‘মাহে নও’। কবি আবদুল কাদিরের কাব্যচর্চার মৌলিকত্ব ছিল ছন্দজ্ঞান। মুসলমান সমাজকে স্বাধীন চিন্তা চর্চায় উদ্বুদ্ধ করাও ছিল তাঁর রচনার বৈশিষ্ট্য। তাঁর প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ: ‘দিলরুবা’, ‘উত্তর বসন্ত’; প্রবন্ধ: ‘কবি নজরুল’, ‘ছন্দ সমীক্ষণ’, ‘কাজী আবদুল ওদুদ’, ‘বাংলা ছন্দের ইতিবৃত্ত’, ‘লোকায়ত সাহিত্য’ ইত্যাদি। এছাড়া ‘নজরুল রচনাবলী’, ‘শিরাজী রচনাবলী’, ‘রোকেয়া রচনাবলী’ সহ বেশ কয়েকজন প্রথিতযশা লেখকের রচনাবলী সম্পাদনা কবির সাহিত্য সাধনার অনন্য কীর্তি। স্বীকৃতি হিসেবে অর্জন করেছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক সহ বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা। ১৯৮৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর কবি প্রয়াত হন।