আফিফকে আফিফ থাকতে দেওয়ার পরামর্শ তামিমের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ১২ আগস্ট, ২০২২ at ৭:৪৪ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের ক্রিকেটে কোন একজন ব্যাটার কিংবা বোলার একটু ভাল করলেই তার পেছনে একটি বিশেষন লাগিয়ে দেন অনেকেই। ফলে সেটা কাল হয়ে দাড়ায় অনেকের জন্য। যেমন একটা সময় মাহমুদউল্লাহকে বলা হতো ক্রাইসিস ম্যান কিংবা সাব্বির-নাসিরদের বলা হতো দ্যা ফিনিশার। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় তারা হারিয়ে গেছেন। মাহমুদউল্লাহরও যায় যায় অবস্থা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে আফিফ সম্পর্কে তেমনই কিছু বিশেষন জুড়ে দিয়ে প্রশ্ন করা হলো তামিমকে। আর সেখানেই আপত্তি করলেন তামিম ইকবাল। তিনি এত দ্রুত আফিফের ওপর কোনো নামের ভার কিংবা তকমা চাপিয়ে না দিতে অনুরোধ করলেন। বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের চাওয়া, আফিফ ছুটতে থাকুক তার মতো করেই। আফিফকে আফিফের মত থাকতে দিন।
গত বুধবার শেষ ওয়ানডেতে দলের বিপদের সময় ব্যাট করতে নেমে তরুণ বাঁহাতি খেলেন ৮১ বলে ৮৫ রানের দুর্দান্ত অপরাজিত এক ইনিংস। মূলত তার ব্যাটে চড়েই আড়াইশ পার করে বাংলাদেশ দল। এ বছর বাংলাদেশের আরও দুটি ওয়ানডে সিরিজে আফিফ দলের বিপর্যয়ে খেলেন দারুণ ইনিংস। গত ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২১৬ রান তাড়া করতে নেমে ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে আফিফ ও মেহেদী হাসান মিরাজ অসাধারণ জুটিতে দলকে জিতিয়ে ফিরেন। আফিফ সেদিন অপরাজিত থাকেন ৯৩ রানে। পরের মাসেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জোহানেসবার্গে ৩৪ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর আফিফ খেলেন ৭২ রানের আরো একটি দারুন ইনিংস।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের এক সংবাদকর্মী আফিফকে ‘ক্রাইসিস ম্যান’ আখ্যা দিয়ে জানতে চাইলেন অধিনায়কের অভিমত। তামিম আপত্তি জানালেন নাম দেওয়া নিয়ে। প্রশংসা করলেন আফিফের বিশেষ এক সামর্থ্য নিয়ে। এখনই ওকে কোনো নাম দিয়ে দেবেন না। আর সেটা একটু দ্রুতই হয়ে যায় ওর জন্য। ওর মধ্যে আমি যা দেখি তা হচ্ছে ওর মধ্যে অনন্য একটা গুণ আছে। যা খুব বেশি মানুষের নেই। যদি দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচের দিকে তাকান তাহলে দেখবেন সে যখন উইকেটে গেছে তখন দল খুব চাপে। কিন্তু সে খেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। এই ধরনের ক্রিকেটার অনেক সময় এই কাজ করতে গিয়ে আউটও হবে। তখন সবাই বলবে যে কী করল। কিন্তু আমি চাই না সে এই গুণটা হারাক। সে যেভাবে ব্যাট করতে চায় সেভাবেই করুক। সে দাপুটে ব্যাটিং করতে চায়। এটা একটা ভাল দিক। ১৯ টি ওয়ানডে খেলা আফিফ বেশ ভালই এগিয়ে যাচ্ছে। তার ব্যাটিং গড় ৪৩.৭২ আর স্ট্রাইক রেট ৯২.৩২। বিপর্যয়ের মধ্যে খেলা ইনিংসগুলো ফুটিয়ে তুলছে তার টেম্পারমেন্টকে। ২২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের ভবিষ্যৎ দারুণ উজ্জ্বল বলেই মনে করেন তামিম। তবে আবারও অনুরোধ করলেন তকমা না দেওয়া নিয়ে। এখনও কেবল ওর শুরুর সময়। আমি নিশ্চিত খুব ভাল একটি ক্যারিয়ার হবে তার। তাই এখন যদি তাকে কোন নাম দিয়ে ফেরা হয় তাহলে সেটা তার জন্য খুব দ্রুতই হয়ে যাবে। সে চাপটা হয়তো আফিফ নিতে পারবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকম্বোডিয়া ও নেপালের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম কল্লোল সংঘের ফুটবল কমিটি গঠিত