পাকিস্তানে আশ্রয় নেওয়া রিফিউজি ক্যাম্পে যে দেশটির ক্রিকেটের উত্থান, সেই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তান যেন বাংলাদেশের চেয়ে ঢের এগিয়ে। ক্রিকেট বিশ্বে তারা নতুন পরাশক্তি হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিয়েছিল আগেই, এখন ধীরে ধীরে তারা সেই পথে আগাচ্ছে। বাংলাদেশকে আফগানদের এই বেড়ে ওঠা দেখতে বললেন ইংলিশ ধারাভাষ্যকার নাসের হুসেইন। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অধ্যায় শুরুর দুই যুগেরও বেশি সময় হয়ে গেছে। ১৯৯৯ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলা দলটি এখনও ম্যাচে লড়াই করে হারার লক্ষ্য নিয়ে নামে। যদিও ভারতে চলমান আসরে তারা সেমিফাইনালে খেলার প্রাথমিক লক্ষ্যের কথা জানিয়েছিল। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্স তার সম্পূর্ণ বিপরীত। শুরুটা হয়েছিল আফগানিস্তানকে হারিয়ে, এরপর নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ন্যুনতম লড়াইয়ের মানসিকতাও দেখাতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল। অন্যদিকে, বিশ্বকাপ শুরুর আগে টানা ১৪ ম্যাচ হেরেছিল আফগানিস্তান। তাদের চেয়ে বেশি ধারাবাহিক হার দেখেছে কেবল জিম্বাবুয়ে, ১৯৮৩–১৯৯২ বিশ্বকাপ পর্যন্ত তারা টানা ১৮ ম্যাচ হেরেছিল। জিম্বাবুয়ে বিশ্বকাপের মূলপর্বে উঠতে পারেনি। সে হিসেবে টানা সর্বোচ্চ হার নিয়ে ভারতে খেলতে নামে রশিদ খান ও হাশমতউল্লাহ শহিদীরা। সে কারণে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল তাদেরকে নিয়ে। বিশ্বকাপ শুরু হতেই তাদের সেই রূপ বদলে গেছে। এমনকি হারের ম্যাচেও ছিল লড়াইয়ের মানসিকতা। প্রথমে ইংল্যান্ড আর গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের পর প্রশংসার বন্যায় ভাসছে আফগানরা। ফলে আগে যে প্রশ্নের তীর ছুড়েছিল, সেই তারাই এখন আফগান বন্দনায় মেতেছে। আর ওয়ানডে সুপার লিগের তিনে অবস্থান করা বাংলাদেশ হচ্ছে সবচেয়ে সমালোচিতদের এক দল। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে নামে সাকিবের দল। এই ম্যাচ পূর্ববর্তী আলোচনায় সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেইন বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের এই বেড়ে ওঠা দেখা উচিত বাংলাদেশের।’ এরপর আফগান ব্যাটারদের খেলার ধরন নিয়ে প্রশংসা ঝরেছে বর্তমান এই ধারাভাষ্যকারের কণ্ঠে, ‘আফগানিস্তানের প্রথম চার ব্যাটারই টেকনিক্যালি দুর্দান্ত। এমনটা আগে দেখিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম চারজনই রান পেয়েছেন। দুর্দান্ত রান তাড়া। চেন্নাইয়ে ২৮০ রানের মতো স্কোর খারাপ নয়। কিন্তু সেটা আফগানরা ঠান্ডা মাথায় তাড়া করেছে। এটা আমাকে মুদ্ধ করেছে।’