আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়া সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ মারা গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ২৩ বছর বয়সী আবদুল্লাহ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সমাপনী বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। খবর বিডিনিউজের।
আবদুল্লাহর বাবা আব্দুল জব্বার বেনাপোল পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর। তিনি বলেন, গত মাসের ১০ তারিখে সিএমএইচে তার অপারেশন করেন ডাক্তাররা। অপারেশন সাকসেসফুলও ছিল। অপারেশনের কয়েকদিন পর আমার ছেলে আমার সঙ্গে হেঁটে বেড়াইছে, আমার সঙ্গে খাবার খাইছে। ২০–২২ দিন আগে সে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। আজ সকালে একেবারে চলে গেল।
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে গত জুলাইয়ে শুরু হওয়া আন্দোলনে আবদুল্লাহ সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। গণ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের দিন ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় ঢাকার তাঁতীবাজার মোড়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হন আবদুল্লাহ। প্রায় দুই–তিন ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে থাকার পর প্রথমে তাকে মিটফোর্ড, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রাতে অপারেশনের পর ডাক্তাররা তার সুস্থ হওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। কয়েকদিন পর তাকে ছাড়পত্র দিলে গ্রামের বাড়ি নিয়ে যায় পরিবার। কিন্তু পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবার ঢাকা মেডিকেলে এনে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২২ আগস্ট তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হলে সেখানেও তার অস্ত্রোপচার হয়। শেষ পর্যন্ত সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন আবদুল্লাহ।
মায়ের আহাজারি : ‘কোটা প্রথা বাতিল হলে মেধায় একটা ভালো সরকারি চাকরি হবে। চাকরি হলে বাবা–মার দুঃখ–কষ্ট লাঘব হবে। আন্দোলন সফল হয়েছে কিন্তু আমার ছেলের স্বপ্ন পূরণ হল না। পুলিশের গুলিতে সব শেষ হয়ে গেল।’
বিলাপ করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর মা মাবিয়া বেগম। তিনি বলেন, আমার ছেলে মেধাবী ছাত্র ছিল। তার আস্থা ও বিশ্বাস ছিল, কোটা প্রথা বাদ না হলে, যত ভাল লেখাপড়া করুক না কেন এ দিয়ে কোনো কাজে আসবে না।