কক্সবাজার বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে রানওয়ে নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে ৮৩ শতাংশ। পেসেঞ্জার টার্মিনালের কাজও ৯৩ শতাংশ শেষ। সাগরের বুকে নির্মিত রানওয়েতে অপরূপভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে লাইটিং সিস্টেম। রক্ষা বাঁধের কাজও শেষ। কিন্তু বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক রূপ দিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘জমি জটিলতা’।
গতকাল শুক্রবার বিকালে বিমানবন্দর উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেছেন সিভিল এভিয়েশনের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এমডি মো. মনজুরুল কবির ভূঁইয়া। তিনি রানওয়ে, লাইটিং সিস্টেম, রক্ষা বাঁধ, টার্মিনালসহ জমি জটিলতার বিষয়গুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের উন্নীত করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ ৮৩ শতাংশ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ৯ হাজার ফিট রানওয়ের প্রস্তুত আছে। আরও ১ হাজার ৭০০ ফিট রানওয়ে করা হয়েছে। সর্বমোট ১০ হাজার ৭০০ ফিট রানওয়ে হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ রানওয়ে। এছাড়া সাগরের মধ্যে যে রানওয়ে নির্মাণ হয়েছে, সেখানকার লাইটিং সিস্টেম ও রক্ষা বাঁধ জাপানের একটি কোম্পানি কাজ করেছে। যা অত্যন্ত ভাল হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই রানওয়েকে আন্তর্জাতিকভাবে ঘোষণা দিতে এখনো কিছু জমি সংক্রান্ত জটিলতা আছে। তারমধ্যে একটি পুরাতন ঝিনুক মার্কেট। এখানকার ব্যবসায়ীদের আমরা ইতোমধ্যে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দিয়েছি। কিন্তু তারা এখনো সরছে না। এছাড়া যেখানে আমাদের মূল টার্মিনাল হবে, সেখানে এখনো অনেক মানুষ বসবাস করছে। তাদেরও খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পে পুনর্বাসন করা হয়েছে। তাদের জন্য আমরা বাঁকখালী নদীতে নতুন করে সেতুও নির্মাণ করেছি। কিন্তু তবুও কিছু মানুষ সরছে না। এছাড়া পিডাব্লিউডিকেও আমরা চিঠি দিয়েছি। এ জন্য আমাদের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। আমরা চূড়ান্তভাবে অপারেশনে যেতে না পারলে এতে প্রকৃত অর্থে দেশেরই ক্ষতি হবে।
এয়ার ভাইস মার্শাল এমডি মো. মনজুরুল কবির ভূঁইয়া বলেন, এখন যে পেসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণ হচ্ছে সেটি ভবিষ্যতে ডমেস্টিক টার্মিনাল হয়ে যাবে। এটির কাজও ৯৩ শতাংশ শেষ হয়েছে। উপরে ঝিনুকের আদলে অবকাঠামো ও ভেতরে আর কিছু কাজ বাকি আছে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রূপায়নে আমরা আরও একটি আধুনিক পেসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণ করবো। এছাড়া বর্তমান টাওয়ার ভবনটিও আমরা ভেঙে ফেলবো। এখানে এয়ার ক্রাফট দাঁড়াবে। ডলারের পরিস্থিতির কারণে আমাদের পেমেন্ট আটকে ছিল। এজন্য কাজও কিছুটা পিছিয়ে গেছে। আমরা বিদেশি কোম্পানিগুলোকে কথা দিয়েছি, টাকার জন্য চিন্তা না করতে। আমরা সময়মতো সব টাকা পরিশোধ করবো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিভিল এভিয়শনের অপরাশেন এন্ড প্লানিং মেম্বার এয়ার কমোডর এএফএম আতিকুজ্জামান, এডমিন মেম্বার আবু সালেহ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন খান, এটিএম মেম্বার এয়ার কমোডর একেএম জিয়াউল হক, ফিন্যান্স মেম্বার এসএম লাভলুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী মো. শহিদুল আফরোজ ও কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ইউনুছ ভূঁইয়া।