আনোয়ারায় বন্যহাতির আক্রমণে আবারও বৃদ্ধা নারীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে উপজেলার বটতলী পুরাতন আশ্রয়ন প্রকল্পের পিছনের পাহাড়ে নিহত বৃদ্ধার শরীরের খন্ড খন্ড অংশ উদ্ধার করা হয়। এর আগের রাতে সোমবার রাতে বন্যহাতির আক্রমণের শিকার হয়ে তাঁর এমন মৃত্যু হয়।
নিহত বৃদ্ধা হালিমা খাতুন (৬০) উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের চুন্নাপাড়া গ্রামের মৃত ছৈয়দ নুরের স্ত্রী৷ স্বামী মারা যাওয়ার পর ৭ পুত্র সন্তান নিয়ে কষ্টের জীবনযাপন করেন নিহত হালিমা। স্বামীর জায়গা না থাকায় ২০১৪ সালে বটতলী সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পে তাকে একটি ঘর দেওয়া হয়। সেই ঘরটিতে বসবাস করছিলেন দীর্ঘদিন ধরে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, নিহত হালিমা সোমবার সন্ধ্যার দিকে আশ্রয়ন প্রকল্পের পাশে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে বেড়াতে যায়। ওই সময় বন্যহাতির আক্রমণের শিকার হন তিনি। তবে ঘটনাস্থল নির্জন জায়গায় হওয়ায় হাতির আক্রমণে মৃত্যুর কথা কেউ জানেনি। দীর্ঘরাত পেরিয়ে সকালে স্থানীয়রা পাহাড়ের পাশে তার শরীরের টুকরো টুকরো অংশ দেখে সন্তানদের জানায়। পরে উদ্ধার করে নিহত বৃদ্ধার দাফন কাফন সম্পন্ন করা হয়।
নিহতের বড় সন্তান মোঃ শাহাব উদ্দিন জানান, হাতির আক্রমণে আমার মায়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। রাতে হাতির মারাত্মক আক্রমণে শরীর টুকরো টুকরো হয়ে যায়। তবে রাতে মায়ের মৃত্যু হলেও আমরা জেনেছি সকালে। আমি বাড়িতে না থাকায় আর মা আত্মীয়র বাড়িতে রয়েছে মনে করে কেউ খোঁজাখুঁজি করেনি। আর হাতির ভয়ে স্থানীয়রাও বের না হওয়ায় খবর পাওয়া যায়নি। মাকে হারিয়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।
স্থানীয় মোঃ ইলিয়াস জানায়, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে দেয়াঙ পাহাড়ে কয়েকটি হাতি অবস্থান করছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা হলে পাহাড়ের পাশের এলাকায় খাবারের খোঁজে নেমে পড়ে। প্রতিদিনের মতো কাল সন্ধ্যায় একটি হাতে গুচ্ছগ্রামে নেমে আসে। হাতির ভয়ে চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে আশ্রয়ন প্রকল্পের উপকারভোগী এক বৃদ্ধা নারীকে একলা পেয়ে হাতিটি মারাত্মকভাবে আক্রমণ করে। এতে তার শরীরের অংশ খন্ড খন্ড হয়ে যায়। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
এরকম ঘটনা আমরা আর চাই না। অতিদ্রুত হাতি গুলোকে তাদের স্থানে ফিরিয়ে নেওয়া হোক। এছাড়া নিহত পরিবারকে ক্ষতিপূরন দেওয়া হোক।