দেশে আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনের পক্ষে সরকার সাড়া দেবে, এমন প্রত্যাশার কথা বলেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। প্রতিনিধিত্বশীল ভোট ব্যবস্থায় জনগণের মতামত সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল শনিবার ঢাকার গুলশানে ওয়েস্টিন হোটেলে কুটনীতিকদের সম্মানে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ইফতারে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিচ্ছিলেন দলের আমির।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেন আর কখনো পথ হারিয়ে না ফেলে সে জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী এই সংস্কার উদ্যোগকে স্বাগত জানায় এবং ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পরামর্শ ও সুপারিশ প্রদান করেছে। খবর বিডিনিউজের।
সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বশীল (পিআর) নির্বাচনব্যবস্থা চালুর পক্ষে জামায়াত জোরালো মত দিয়েছে তুলে ধরে শফিকুর রহমান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এই ব্যবস্থায় জনগণের মতামত সঠিকভাবে প্রতিফলিত হবে এবং ফ্যাসিবাদী শাসন পুনরায় ফিরে আসার পথও রুদ্ধ হবে। এ ছাড়া লক্ষ লক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির দাবিও আমরা তুলে ধরেছি। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের এই আহ্বানে সাড়া দেবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
জামায়াতের এই আয়োজনে ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুক, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়ো ওয়েন, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপি, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার গিরি গোরিওভিস কোজিন, অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনার সুসান রেলি, ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশি, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রমিস সেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ইরাক, ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, মরক্কো, নেদারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, ভুটান, সিঙ্গাপুর, ব্রুনেই, ডেনমার্ক, মালয়েশিয়া, ভ্যাটিকান সিটি, কানাডা, ব্রাজিল, আলজেরিয়া, জাতিসঙ্ঘের বিভিন্ন সংস্থা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
ইফতারপূর্ব শুভেচ্ছা বক্তব্যে জামায়াতের আমির বলেন, গত ১৫ বছরের আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতকে দমন করার সব ধরনের অপচেষ্টা চালিয়েছে। জামায়াতের পাঁচজন শীর্ষ নেতাকে ফাঁসি দিয়েছে। ছয়জন নেতাকে কারাগারে বা পুলিশের হেফাজতে নির্মমভাবে হত্যা করাসহ হাজার হাজার নেতা–কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। অনেকে গুমের শিকার হয়েছেন এবং অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক ব্যবস্থা টেকসই শান্তি ও উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। আমাদের দায়িত্ব হল প্রত্যেক নাগরিকের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া, প্রতিটি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এবং দেশ গঠনে সবাইকে সমান সুযোগ দেওয়া।