প্রতিষ্ঠার প্রায় ৬০ বছর পর ভৌত অবকাঠামোগত আধুনিকায়ন হতে যাচ্ছে দেশের একমাত্র মেরিটাইম প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি। এজন্য প্রায় ১৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘অবকাঠামোগত পুনর্গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির আধুনিকীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। প্রকল্পটি বর্তমানে একনেকে (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ।
জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি সমুদ্রগামী জাহাজের অফিসার ও প্রকৌশলীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠে। বর্তমানে ওইসময়কার অবকাঠামোতেই চলছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম। ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) চাহিদা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ মান নিশ্চিত করার ফলে আইএমও হোয়াইট লিস্টে অন্তর্ভুক্ত হয় বাংলাদেশ। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি সমুদ্রগামী জাহাজের ক্যাডেট তৈরিতে সুনামের সাথে কাজ করে চললেও প্রতিষ্ঠানটির পুরাতন অবকাঠামো আধুনিক মেরিটাইম এডুকেশন এন্ড ট্রেনিংয়ের জন্য যুগোপযোগী নয়। তাই প্রতিষ্ঠানটির সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ২০১৮ সাল থেকে অবকাঠামোগত আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয় নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়। গণপূর্ত অধিদপ্তর এজন্য প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা দেয় মন্ত্রণালয়ে। বেশ কয়েকদফা বৈঠক ও চিঠি চালাচালির পর প্রকল্পটি বর্তমানে একনেক সভায় অনুমোদনের জন্য রয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় দ্বিতল মেরিন ওয়ার্কশপ ভবন, সিমেন্সশিপ ভবন, রাডার ভবন, ডেমনেস্ট্রেশন ভবন, দ্বিতল অডিটরিয়াম, জিমনেশিয়াম ও সুইমিল পুল নির্মাণ, সুইমিংপুলে সারভাইভাল ট্রেনিং সুবিধা রাখা হয়েছে। তাছাড়া চার তলা দুটি অফিসার কোয়ার্টার, ৬ তলা বিশিষ্ট দুইটি স্টাফ কোয়ার্টার, ৪ তলা অফিসার্স ডরমেটরি, ব্যাচেলর স্টাফ ডরমেটরি, গার্ড রুম, সেন্ট্রি পোস্ট, বিদ্যুতের সাব স্টেশন, পাম্প হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্মিতব্য ভবনগুলোর সাথে সংযোগ সড়কসহ পুরো মেরিন একাডেমি এলাকায় ৬ ফুট উঁচু ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। থাকবে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টও।
গণপূর্ত বিভাগ চট্টগ্রাম ডিভিশন-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মইনুল ইসলাম রোববার দুপুরে দৈনিক আজাদীকে জানান, ‘বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির বর্তমান অবকাঠামোগুলো অনেক পুরোনো। প্রায় ৬০ বছর আগে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে আন্তর্জাতিক মানের ক্যাডেট তৈরি করা হলেও অনুন্নত অবকাঠামোর কারণে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমে ব্যাঘাত তৈরি হচ্ছে। যে কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে অবকাঠামোগত আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘মেরিন একাডেমি আধুনিকায়নের প্রজেক্টটি বর্তমানে একনেক সভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ইতোমধ্যে পিইসি’র (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) মিটিং হয়ে গেছে। একনেকে অনুমোদন হলে আমরা টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করবো। তিনি বলেন, প্রকল্পটি তিন বছর মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্প ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১৩৬ কোটি টাকা।’