আদালতের আদেশ অমান্য করে কর্ণফুলী নদীর জায়গা ইজারা দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তিন কর্মকর্তাকে নোটিস পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ গতকাল সোমবার এ নোটিস পাঠান। মনজিল মোরসেদ বলেন, কর্ণফুলী নদী রক্ষার জন্য পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) ২০১০ সালে জনস্বার্থে একটি রিট আবেদন দায়ের করে। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট কর্ণফুলী নদীর সীমানা জরিপ করে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়। ওই আদেশ পেয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন প্রতিবেদন দাখিল করে এবং কয়েকশ অবৈধ স্থাপনার তালিকা দাখিল করে এবং উক্ত প্রতিবেদনে ফিরিঙ্গি বাজার মৌজার আরএস ৬০১ নম্বর দাগ নদীর জায়গা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মনজিল মোরসেদ বলেন, পরবর্তীতে হাই কোর্ট পুনরায় শুনানি শেষে রায় দিয়ে রুল ‘অ্যাবসলিউট’ (যথাযথ) করেন এবং নদীর জায়গার দখল উদ্ধার করার নির্দেশ দেন। খবর বিডিনিউজের। তিনি আরও জানান, আদালতের ওই রায় ও নির্দেশনা অমান্য করে গত ৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষে ডেপুটি ম্যানেজার/স্টেট দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকায় একটি দরপত্র আহ্বান করেন। ওই দরপত্রে ফিরিঙ্গি বাজার মৌজার আরএস ৬০১ নম্বর দাগ ১০ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়। পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি এইচআরপিবির নজরে এলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ তিন কর্মকর্তাকে ওই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে নোটিস পাঠানো হয়, বলেন মনজিল মোরসেদ। যাদের নোটিস পাঠানো হয়েছে তারা হলেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি ম্যানেজার/স্টেট মো. শিহাব উদ্দিন।
নোটিসে বলা হয়, হাই কোর্ট কর্তৃক কর্ণফুলী নদীর জায়গা উদ্ধার করার নির্দেশনা এবং অপর একটি জনস্বার্থের মামালায় আপিল বিভাগ কর্তৃক নদীর জায়গার ইজার না দেওয়ার আদেশ থাকা সত্ত্বেও কর্ণফুলী নদীর জায়গা ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যা আদালত অবমাননার অপরাধ। আগামী তিন দিনের মধ্যে উক্ত ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল ও দরপত্র প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, নোটিসদাতাকে অবিহিত করা না হলে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হবে বলে নোটিসে জানানো হয়েছে।