মৃত্যুর চার মাস পর ইকরার (১৩) হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। গত ৯ জুলাই রাত ১১টায় নগরীর ডবলমুরিং থানার দেওয়ানহাট এলাকায় ওড়না পেচানো অবস্থায় ইকরার লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করেছিল ইকরা আত্মহত্যা করেছে। তবে তার নানা-নানী বারবার বলছিল এটা সুস্পষ্ট হত্যাকাণ্ড। শেষ পর্যন্ত তাদের কথাই সত্য হল। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গেছে, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডবলমুরিং থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আজাদীকে বলেন, এ ঘটনায় প্রথমে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছিল। এখন নিশ্চিত হয়েছে যে এটি হত্যাকাণ্ড। ইকরার নানী হাসমত আরা কহিনূর বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আমরা তিন আসামিকে (ইকরার সৎ মা শিরিণ আক্তার (২৮), বাবা ওসমান ফারুক বিবলু (৪১) এবং সৎ মামা মো. মুছাকে (৩৭) গ্রেপ্তার করেছি। মামলার এজাহারে ইকরার নানী হাসমত আরা কহিনূর জানান, তার মেয়ে রাজিয়া সুলতানা আঁখির সাথে ২০০৫ সালে ওসমান ফারুক বিবলুর বিয়ে হয়। ২০০৭ সালে তাদের ঘরে ইকরার জন্ম হয়। ২০১৪ সালে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়। পরে তাদের মেয়ে আঁখিকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়া হয। আঁখি বর্তমানে সৌদিআরব থাকেন। ইকরা ছিল তার বাবার কাছে। সৎ মা শিরিণ নানাভাবে তাকে নির্যাতন করতো। তার কোলে ছেলে রাইয়ান ওসমান আসার পর ইকরার উপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। নির্যাতনে তার বাবা বিবলু ও সৎ মামা মুছাও যোগ দিতো বিভিন্ন সময়ে। গত ৯ জুলাই আমি ইকরার সাথে কথা বলতে মোবাইল ফোনে কল দিলে নানা ছল ছুতোয় তা এড়িয়ে যাওয়া হয়। এতে আমার সন্দেহ হয়। পরে সৎ মামা মুছা ফোনে আমাকে জানায়, ইকরা বাসার জানালায় দোল খাওয়ার সময় গলায় ফাঁস লেগে মারা গেছে। আমরা ছুটে যাই। পুলিশও আসে। প্রথম থেকেই আমাদের বদ্ধমূল ধারণা ছিল ইকরাকে হত্যা করা হয়েছে। এতে তার সৎ মা শিরিণ জড়িত থাকতে পারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে সেই সত্যটা বেরিয়ে আসল। এখন আমার একমাত্র দাবি, আমার নাতিনি হত্যার বিচার চাই। যারা এ মাসুম বাচ্চাটিকে নির্দয় ভাবে হত্যা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।