পৃথিবীতে মানুষ তার প্রকৃত সুখ অনুধাবন করতে করতেই আমরা অনেক সময় জীবন পার করে দিই। আমাদের সন্তুষ্টির জায়গাটা আসলে সবসময় খালি ভাবি। নিজেদেরকে কখনো স্বয়ংসম্পুর্ণ বা সফল ভাবতে আমাদের কমবেশি সকলের মনের কার্পণ্যবোধে দেখা যায়। মূলত আমাদের সন্তুষ্টির জায়গা নির্ধারণ করতে আমাদের মনের বিবেকটায় যথেষ্ট। বিবেকের তাড়নায় সত্যকে সত্য, মিথ্যাকে মিথ্যা নির্ণয়ই আমাদের মূল বিষয়। আর বিবেকেজয়ী মানুষই মূলত আত্মজয়ে জয়ী হতে পারে। আর আত্মজয়ী মানুষরা পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে করতে পারে। কেননা সুখ ও শান্তিরটা নির্ধারণ করা যায় শুধু অনুভবের জায়গা দিয়ে। আর আত্নজয়ী হতে না পারা মানুষেরা কখনো নিজের ওপর বিশ্বাস বা সন্তুষ্ট না। আত্মজয়ী মানুষরা সবসময় নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব সততার সাথে পালনে সচেষ্ট থাকে। নিজেকে কখনো আত্মঅহংকার কিংবা লোভ লালসায় জড়িয়ে দেয় না। আত্মজয়ী মানুষরা আত্মসমালোচনাকে প্রাধান্য দেয়। নিজের জীবনের ভুলগুলো অকপটে স্বীকার করে। অতীতের ভুলগুলো শুধরানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করে। কেননা মানুষ মাত্র ভুল করে। কোনো মানুষই ভুলের উর্ধ্বে নয়। ভুলকে শুধরিয়ে নতুনভাবে নিজেকে পরিশুদ্ধ করায় একজন আত্মজয়ী মানুষের অন্যতম কাজ। একজন আত্মজয়ী মানুষ জীবন সংগ্রামে সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, কঠোর সাধনা, একাগ্রতা, মমতা ও ধৈর্য শক্তি দিয়ে নিজেকে প্রতিনিয়ত সংগ্রামে নিয়োজিত রাখে; নিজেকে প্রতিমুহূর্ত, প্রতিদিন নানান কর্মের জন্য নিজের বিবেকে দায়বদ্ধতার আলোকে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতায় রাখে। আর বিবেকজয়ী মানুষ নিজেদের সততা, দেশপ্রেম ও স্বচ্ছতার জন্যই নিজেকে আত্মজয়ী মানুষ ভাবতে গর্ববোধ করে। একজন আত্মজয়ী মানুষকে জীবনের প্রতিসেকেন্ডেই বিবেকের রাজ্যে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। আর বিবেকের রাজ্যে পরাজিত ব্যক্তিরা কখনো আত্মজয়ের সন্ধ্যান লাভ করতে পারে না। আসুন আমরা বিবেকের তাড়নায় নিজেকে আত্মমর্যাদা, বিশ্বাস, সততা, দেশপ্রেম ও ধৈর্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। আত্মজয়ের জন্য আমাদেরকে বেশি দূর যেতে হবে না। নিজের ছায়ার মধ্যে বিবেকের মধ্যে নিজেকে মনুষ্যত্ব সম্পন্ন মহৎ প্রাণ ও সততার সাথে জীবনযুদ্ধে উত্তীর্ণ হওয়ায় যথেষ্ট। আমাদেরকে মনে রাখতে আত্মজয় কখনো হিংসাত্মক বিষয় না। আত্মজয়ের মধ্য দিয়ে আমাদেরকে আত্নসমালোচনাকে সহজে মেনে নেয়ার মনোভাব থাকতে হবে।