সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন ফটিকছড়ির বিভিন্ন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়র, ইউপি সদস্য, নারী ইউপি সদস্য, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলররা। জনপ্রতিনিধিরা অফিসে না আসায় নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
অতিদ্রুত স্থানীয় সরকার বিভাগের এই সেবা স্বাভাবিক করে নাগরিক ভোগান্তি নিরসনের দাবি জানিয়েছেন সেবাপ্রত্যাশীরা।
জানা যায়, উপজেলায় ১৮টি ইউনিয়ন, ২টি পৌরসভা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান মেয়র, কাউন্সিলর, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, নারী ইউপি সদস্য যাদের ৭০শতাংশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গেল ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের পরে উলজেলার বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দিয়েছেন।
কেউ কেউ এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন সুবিধামত স্থানে। নিজ কার্যালয়ে আসছেন না অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি। যার ফলে জন্মসনদ, মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিক সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারেশকায়েম সনদসহ কোন প্রকার সেবা পাচ্ছে না নাগরিকরা। এদিকে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে উপজেলা জনপ্রতিনিধিদের কর্মস্থলে না থাকার তালিকা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
১৮ আগস্ট পাঠানো ইউএনও’র সাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তিতে যেসব জনপ্রতিনিধিরা অনুপস্থিত রয়েছেন তারা হলেন- উপজেলা চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন মুহুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন নুপুর এবং জসিম উদ্দিন, ফটিকছড়ি পৌরসভার মেয়র ইসমাইল হোসেন, নাজিরহাট পৌরসভার মেয়র এ কে জাহেদ চৌধুরী, বাগানবাজার চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সাজু, দাঁতমারা চেয়ারম্যান জানে আলম, নারায়ণহাটের চেয়ারম্যান আবু জাফর মাহমুদ, কাঞ্চননগর চেয়ারম্যান দিদারুল আলম, সুন্দরপুর চেয়ারম্যান মো: শাহনেওয়াজ ও সুয়াবিলের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন। তাদের স্থানে ৬টি ইউনিয়ন পরিষদে উপজেলার ৬জন কর্মকর্তাকে ইউনিয়নসমূহের জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
তবে সরেজমিনে গিয়ে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে উপজেলার ভূজপুর, নানুপুর এবং লেলাং ইউনিয়ন পরিষদে৷ এসব পরিষদে চলছে আগের মতই নাগরিক সেবা প্রদান। চেয়ারম্যান, মেম্বার, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সরব উপস্থিতি ছিল এসব পরিষদে। এছাড়াও বাকি অন্যান্য পরিষদ গুলোতে স্বাভাবিক সেবা প্রদান চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন-চলমান পরিস্থিতির কারণে ফটিকছড়ির ২টি পৌরসভার মেয়র এবং ৬জন ইউপি চেয়ারম্যান তাদের কর্মস্থলে অননুমোদিত অনুপস্থিত রয়েছেন। ফলে জনগণের জন্ম মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত সেবা প্রাপ্তি বিগ্নিত হচ্ছে এবং জনস্বার্থ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। এজন্য ৬টি ইউনিয়ন পরিষদে উপজেলার ৬জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।