নগরের আতুরার ডিপো এলাকায় ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে ফলের আড়ত, প্লাস্টিকের দানা কাটার কারখানা ও ঝুট কাপড়ের গুদামসহ ৪০টি দোকান। প্লাস্টিকের দানা কাটার একটি কারখানা থেকে গতকাল রোববার বিকাল ৩টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের ছয়টি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে এক ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু পুড়ে যাওয়া দোকানের মধ্যে ভুষি এবং ঝুট কাপড় থাকায় আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণে বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসকে। এছাড়া সংকট ছিল পানিরও। সর্বশেষ দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত ১১টার পর আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ ঘোষণা করে ফায়ার সার্ভিস। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
আগুন লাগার পর মুরাদপুর–অক্সিজেন সড়ক দিয়ে যান চলাচল সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ।
বায়েজিদ ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. কামরুজ্জামান গত রাত সাড়ে ১১টায় আজাদীকে বলেন, আগুনে ২২ জন মালিকের ৪০টি দোকান পুড়ে গেছে। এখানে কাঁচামালের আড়ত এবং ঝুট কাপড় ও প্লাস্টিকের গোডাউন ছিল। আগুন এক ঘণ্টার মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও ঝুট কাপড়ের জন্য পুরোপুরি নির্বাপণে সময় লাগে। ঝুট কাপড়ে পানি দিলেও সেগুলো ভেতরে পৌঁছে না। জ্বলে ওঠে। তিনি বলেন, পানিরও একটু সংকট ছিল। সব মিলিয়ে আগুন পুরোপুরি নির্বাপণে সময় লেগেছে। রাত ১১টা ১০টা মিনিটে আগুন নির্বাপণ ঘোষণা করি। আগুন লাগার কারণ জানতে চাইলে বলেন, কালাম বা কামাল নামে একজনের প্লাস্টিকের দানা কাটার কারখানা থেকে আগুন লেগে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুর রাজ্জাক আজাদীকে বলেন, ২টা ৫৮ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ পাই। আগ্রাবাদ, কালুরঘাট ও বায়েজিদের ৬টি গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে সেখানে একটি ভুষির গুদাম ছিল। ভুষির জন্য আগুন নেভাতে সময় লাগে। কয়েকদিন আগে একজন ৩৫ লাখ টাকার ভুষি আনে ওই গুদামে। তিনি বলেন, ২৩টি সেমিপাকা দোকানঘর ও ২০টির মতো বিভিন্ন গোডাউন, কারখানা ঘর ও মালামাল পুড়ে গেছে।
বশির উদ্দিন নামে ক্ষতিগ্রস্ত এক দোকানদার বলেন, বেলা ২টার পর দোকানের পেছনের দিকে গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
মন্টু সওদাগার নামে এক আড়তদার বলেন, আমার দোকানের বেল, কলা ও আপেল পুড়ে গেছে। কিছু বের করতে পারিনি।
এদিকে সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, প্রথম সারিতে সবগুলো দোকান। ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী এ সংখ্যা ২৩। দোকানের পেছনে রয়েছে কারখানা ও গুদাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন লাগার পর পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। আতঙ্কে আশপাশের অনেক দোকানের মালিক তাদের মালামাল নিরাপদে বাইরে নিয়ে আসেন। পুড়ে যাওয়া ফলের দোকানগুলোতে কলা, আপেলসহ নানা ফল পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। বিকালে দেখা গেছে, দোকানের দিক থেকে আগুন নিভে গেলেও দোকানগুলোর পেছনে গুদামে আগুন জ্বলছিল। যেসব দোকানদার তাদের মালামাল বের করতে সক্ষম হন তা রাস্তায় এনে জড়ো করে রাখেন।