জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে শহীদ ওয়াসিম আকরাম অঞ্চলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে চট্টগ্রাম জেলা। গতকাল সোমবার নিরপেক্ষ ভেন্যু নোয়াখালীর শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ খেলায় চট্টগ্রাম জেলা টাইব্রেকারে ৪–১ গোলে ফেনী জেলাকে হারিয়ে দেয়। খেলার নির্ধারিত সময় ৯০ মিনিট,পরে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলা ১–১ গোলে ড্র থাকে। পরে ফলাফল নির্ধারণে টাইব্রেকারে খেলার নিষ্পত্তি করা হয়। এ পর্ব শেষে ঢাকায় ৮ অঞ্চলের (বিভাগ) ৮ চ্যাম্পিয়ন দলকে নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। জানা গেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা জেলার মুখোমুখি হতে পারে। গতকাল শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের খেলা অনুপোযোগী মাঠে চট্টগ্রাম ও ফেনী শুরু থেকে সমানতালে খেলার চেষ্টা করেছে। দু–দলই ১টি করে গোল করেছে। আবার চার পাঁচটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে। দু’দলের গোলকিপারও ৩/৪ টি করে নিশ্চিত গোল রক্ষা করেছে। কিন্তু টাইব্রেকারে চট্টগ্রামই বাজিমাত করেছে। টাইব্রেকারে ৪টি শটে চারটিতেই গোল করেন বাবু, ফাহিম, জাহেদ ও দীপু। অন্যদিকে ফেনীর রাব্বী প্রথম শটে গোল করলেও দ্বিতীয়টিতে নুরুদ্দিনের শট সাইডবারে লাগে এবং রাকিবুলের তৃতীয় শট চট্টগ্রামের কিপার হিরো ঠেকিয়ে দিয়ে সত্যিই হিরো বনে যান।
তিনি ম্যান অব দ্য ফাইনাল নির্বাচিত হন। খেলার শুরু থেকেই চাপিয়ে খেলার চেষ্টা করে ফেনী। প্রথমদিকে অন্ততঃ নিশ্চিত ৩ সুযোগ থেকে ১টি কাজে লাগাতে সক্ষম হয়। ৫ মিনিটে ফেনীর কালামের শট জালে ঢোকার আগে চট্টগ্রামের স্টপার আক্তার ঠেকিয়ে দিয়ে নিশ্চিত গোল রক্ষা করেন। ১৩ মিনিটে আবারো সেই কালাম সহজ সুযোগ হাতছাড়া করলে ফেনী নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত হয়। অবশেষে ২০ মিনিটে গোলের দেখা পায় ফেনী। তবে গোলটি ছিল আত্মঘাতী। এ সময় ফেনীর লেফট উইঙ্গার রাব্বীর ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে চট্টগ্রামের ডিফেন্ডার ও অধিনায়ক আলাউদ্দিন নিজের জালে নিজেই বল ঢুকিয়ে দেন (১–০)। গোল হজম করার পর চট্টগ্রাম জেলা প্রতিপক্ষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ক্রমাগত আক্রমণে ফেনীর রক্ষণভাগে ফাটল ধরালেও স্ট্রাইকাররা ব্যর্থতার পরিচয় দেন।
দ্বিতীয়ার্ধে চট্টগ্রাম নতুনভাবে খেলা শুরু করে। পরিবর্তিত খেলোয়াড় দীপু ও শাহীন মাঠে নামলে খেলা ঘুরে যায়। ১২ মিনিটে ডানপ্রান্তে সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকে দীপু ফাঁকায় বল পেয়ে বাইরে মেরে দেন। ১৪ মিনিটে কর্নারে ফেনীর রাব্বির হেড অল্পের জন্য লক্ষভ্রষ্ট হয়। ১৮ মিনিটে সমতা আনে চট্টগ্রাম। ডানপ্রান্তে কর্নার লবে ফেনীর বক্সে সৃষ্ট জটলায় সুমন ডানপায়ের জোরালো শটে বল জালে জড়িয়ে দেন (১–১)। এ গোলের পর চট্টগ্রাম আরো সুযোগ পেলেও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে ফেনীর নুরুদ্দিন কিপারের হাতে মেরে দিলে খেলা অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। অতিরিক্ত সময়ে দু’দল গোলের চেয়ে রক্ষণ সামলাতে ব্যস্ত ছিল। এরপরও অতিরিক্ত সময়ের ৭ মিনিটে ফেনীর কিপারের ভুলে প্রাপ্ত সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি চট্টগ্রামের আসিফ। ১১ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহীনও কিপারের হাতে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন। এছাড়া কর্নার থেকে ফেনীর নুরুদ্দিনের হেড চট্টগ্রামের কিপার হিরোর হাতে চলে গেলে খেলা টাইব্রেকারে গড়ায়।
উল্লেখ্য, সিডিএফএ সভাপতি এস এম শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল, কোষাধ্যক্ষ দিদারুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক সালাউদ্দিন জাহেদ, নির্বাহী সদস্য মাহাবুবুল আলম, মাহামুদুর রহমান মাহাবুব, জসিম আহামেদ, সাইফুল আলম খান, কাজী জসিমউদ্দীন সহ বিপুল সংখ্যক ক্রীড়া সংগঠক, সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড় এ খেলা দেখতে উপস্থিত ছিলেন। এদিকে চট্টগ্রাম জেলা দল ফেনী জেলা দলকে হারিয়ে আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করায় সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল দলের ম্যানেজার মো. সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি।











