আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে সোমবার থেকে শুরু হওয়া জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু সম্মেলনে কপ–২৯ এ অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলন কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। খবর বিডিনিউজের।
এবারের সম্মেলনটিকে পরিবেশ বান্ধবের ভান করে দেওয়া ধোঁকা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, তিনি বাকুতে যাচ্ছেন না। এবারের আয়োজক দেশ আজারবাইজানের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা নেই বলে অভিযোগ করেছেন থুনবার্গ, জানিয়েছে বিবিসি। গার্ডিয়ান সংবাদপত্রে সোমবার প্রকাশিত এক নিবন্ধে থুনবার্গ লিখেছেন, আজারবাইজান জীবাশ্ম জ্বালানী উৎপাদন সমপ্রসারণের পরিকল্পনা করছে, তাদের রাষ্ট্রীয় পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি সোকারের তেল ও গ্যাস দেশটির রপ্তানি আয়ের প্রায় ৯০ শতাংশ।
এটি প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে তার সঙ্গে সম্পূর্ণ বেমানান বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
কপ–২৯ সম্মেলনগুলো আজারবাইজান এবং সাবেক দুই আয়োজক সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিশরের মতো কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলোকে মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত রাখার অনুমতি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আজারবাইজানকে একটি দমনমূলক রাষ্ট্র হিসাবে বর্ণনা করে তিনি নাগরনো–কারাবাখ ও আর্টসখ অঞ্চলে বসবাসরত আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠীর মানুষের বিরুদ্ধে আজারবাইজানের আলিয়েভ সরকারের করা মানবাধিকার লঙ্ঘন এর কথা উল্লেখ করেন।
চলতি বছরের কপ–২৯ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অনেক আজারবাইজান সরকারের সমালোচনা করতে ভয় পাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
কিশোর বয়স থেকেই জলবায়ু আন্দোলন নিয়ে কাজ করে আসা গ্রেটার বয়স এখন ২১ বছর। যেসব কারণে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমন বেড়ে যাচ্ছে তার অন্যতম হলো জীবাশ্ম জ্বালানি। গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমন বেড়ে প্রাক শিল্পযুগের তুলনায় বিশ্বের তাপমাত্রার এখন বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় জলবায়ুর পরিবর্তনগুলো দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে।
তাপমাত্রার একের পর এক বিশ্ব রেকর্ডের মধ্য পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র খরা বা অতিরিক্ত বৃষ্টি, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিধসের মতো প্রাণঘাতী ও সম্পদ বিনষ্টকারী প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে পরিবেশকর্মীরা তাই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছেন।