সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও আজ থেকে টোল আদায় হচ্ছে না নগরীর প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে টোলের টাকা সরাসরি ব্যাংকে পাঠানোর ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে আগামী ১ জানুয়ারি বছরের প্রথমদিন থেকে টোল আদায় হতে পারে বলে একটি সূত্র আভাস দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে এক্সপ্রেসওয়ের পতেঙ্গা প্রান্তে স্থাপিত টোল প্লাজায় টোল আদায় কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিল।
সূত্র জানিয়েছে, ৪ হাজার ২শ ৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে শুরু থেকে টোল আদায়ের কথা ছিল। তবে গত কয়েকমাস ধরে পরীক্ষামূলকভাবে যান চলাচল করলেও কোনো টোল আদায় করা হয়নি। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সিডিএ পতেঙ্গা প্রান্তে টোল প্লাজার নির্মাণ কাজও শেষ করেছে। ইতোমধ্যে সিডিএ ঘোষণা দিয়েছিল যে, ১৯ ডিসেম্বর (আজ) সকাল ১০টা থেকে নির্দিষ্ট হারে টোল প্রদান করেই যান চলাচল করতে হবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে টোল আদায় কার্যক্রম কয়েকদিন পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে টোল আদায় হতে পারে বলে একটি সূত্র আভাস দিয়েছে।
তবে সিডিএ চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার নুরুল করিম বলেছেন, আমরা কয়েকদিন পর থেকে টোল আদায় করবো। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও আমরা আরো একটু প্রস্তুতি নিতে চাই। বিশেষ করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আমরা টোলের টাকা ব্যাংকে প্রেরণের একটি ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। এটি হয়ে গেলেই টোল আদায় কার্যক্রম শুরু হবে বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ১০ ধরনের গাড়ি চলাচলের সুযোগ রেখে নতুন টোল হার অনুমোদন করেছে মন্ত্রণালয়। এতে জিইসি, সিআরবি, আগ্রাবাদ থেকে ফ্লাইওভারে ওঠে সিইপিজেড, সিমেন্ট ক্রসিং, কেইপিজেড, সি বিচে নামা সিএনজি টেক্সির জন্য ৩০ টাকা, কারের জন্য ৮০ টাকা, জিপ এবং মাইক্রোবাস ১০০ টাকা, পিকআপ ১৫০ টাকা, মিনিবাস ২০০ টাকা, বাস ২৮০ টাকা, ট্রাক (চার চাকা) ২০০ টাকা, ট্রাক (ছয় চাকা) ৩০০ টাকা এবং কাভার্ড ভ্যান ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সি বিচ, কেইপিজেড, সিইপিজেড থেকে ওঠে নিমতলা, আগ্রাবাদ, টাইগারপাস এবং লালখান বাজারে নামার জন্য সিএনজি টেক্সির জন্য ৩০ টাকা, কারের জন্য ৮০ টাকা, জিপ এবং মাইক্রোবাস ১০০ টাকা, পিকআপ ১৫০ টাকা, মিনিবাস ২০০ টাকা, বাস ২৮০ টাকা, ট্রাক (চার চাকা) ২০০ টাকা, ট্রাক (ছয় চাকা) ৩০০ টাকা এবং কাভার্ড ভ্যানের জন্য ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। জিইসি এবং টাইগারপাস থেকে ওঠে আগ্রাবাদ, ফকিরহাটে নামা আবার নিমতলা, আগ্রাবাদ এক্সেস রোড থেকে ওঠে লালখান বাজার ও টাইগারপাসে নামার গাড়িসমূহের জন্য সিএনজি টেক্সির জন্য ২০ টাকা, কারের জন্য ৫০ টাকা, জিপ ৭০ টাকা, মাইক্রোবাস ৯০ টাকা, পিকআপ ১৩০ টাকা, মিনিবাস ১৮০ টাকা, বাস ২৫০ টাকা, ট্রাক (চার চাকা) ১৮০ টাকা নির্ধারণ করে এক্সপ্রেসওয়ের এই অংশে ট্রাক (ছয় চাকা) এবং কাভার্ড ভ্যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত টোল প্রস্তাবে মোটর সাইকেল এবং ট্রেইলরের নামোল্লেখ করে চলাচল নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদিত টোলে বিভিন্ন পয়েন্ট ওঠানামার হার নির্ধারণ করে দেয়া হলেও এখন কেবলমাত্র মুরাদপুর ও বেবি সুপার মার্কেটের সামনে থেকে উঠে লালখান বাজারে নামা যাবে। পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে উঠার সময়ই লালখান বাজার পর্যন্ত টোল আদায় করা হবে। তবে কেউ চাইলে এক্সপ্রেসওয়ে ধরে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার ধরে মুরাদপুর কিংবা ষোলশহরের বায়েজিদ রোডে গিয়ে নামতে পারবেন। অপরদিকে শহরের দুইটি পয়েন্টের যেখান থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে উঠুক না কেনো পতেঙ্গা প্রান্তে নামার সময় লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গার নির্ধারিত টোল পরিশোধ করতে হবে।