আগ্রাসী মনোভাবই সুযোগ

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আজ টি-টোয়েন্টি অভিষেক রাঙাতে চায় টাইগাররা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বুধবার , ২৭ অক্টোবর, ২০২১ at ৬:২২ পূর্বাহ্ণ

টেস্ট এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে ইংল্যান্ডকে একাধিক হারের স্বাদ দিয়েছে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয় ওয়ানডে বিশ্বকাপে চারবারের দেখায় ইংলিশদের দুইবার হারের স্বাদ দিয়েছে। কিন্তু অবাক করা বিষয় হচ্ছে এখনো ইংলিশদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি খেলা হয়নি বাংলাদেশের। অথচ ১৭টি দেশের বিপক্ষে ১১৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ গত ১৭ বছরে। সেখানে প্রতিপক্ষের তালিকায় নেই ইংল্যান্ড। অবশেষে সেই ইংলিশদের সামনে এবার বাংলাদেশ।
তাও বিশ্বকাপের মতো আসরে। বিশ্বকাপেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক হচ্ছে টাইগারদের। ওয়ানডে বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও শুরু করেছে দুর্দান্তভাবে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে দিয়েছে ইয়ন মরগ্যানের দল।
অপরদিকে বিপরীত যাত্রা বাংলাদেশের। শ্রীলংকার বিপক্ষে বিশাল স্কোর গড়েও অনিয়ন্ত্রিত বোলিং এবং ক্যাচ মিসের মহড়া দিয়ে হেরেছে প্রথম পর্ব পার হয়ে আসা বাংলাদেশ। তাই কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে টাইগারদের সেটা বলাই যায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ পর্বের প্রথম ম্যাচে হারের পর বাংলাদেশ দলের ঘরে বাইরে অসন্তোসের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে লংকানদের বিপক্ষে হারের ক্ষতটা যতটানা জ্বালা দিচ্ছে তার চাইতে বেশি জ্বালা দিচ্ছে ঘরে বাইরে সমালোচনা। কেউ কেউ এরই মধ্যে দলে অন্তর্কলহের গন্ধও পাচ্ছেন। তবে সে সবকে ছাপিয়ে আপাতত বাংলাদেশ মনোনিবেশ করতে চায় মাঠের লড়াইয়ে। শ্রীলংকার বিপক্ষে দারুণ করেছিল ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু বোলাররা পারেনি সেটাকে কাজে লাগাতে। লিটন দাশের দুটি সহজ ক্যাচ মিস এখনো যেন পোড়াচ্ছে বাংলাদেশকে। ঠিক এমন অবস্থায় ফুটন্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনুনে পড়ার মতো আজ ইংলিশদের সামনে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচেই ইংলিশরা তাদের আগ্রাসী মনোভাবটা ফুটিয়ে তুলেছে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে। আর সেটাকে সুযোগ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচ ওটিস গিবসন।
আমরা যে কোনো দলকে হারাতে পারি। এই বিশ্বাস নিয়ে এখানে এসেছি। আমরা বাছাইয়ে কঠিন গ্রুপ পেরিয়ে এসেছি। সেখানে একটু স্নায়ু চাপও ছিল। আমরা মূল পর্বে কেবল ম্যাচের সংখ্যা বাড়াতে আসিনি। আমরা বিশ্বাস করি নিজেদের দিনে আমরা যে কোনো দলকে হারাতে পারি। ইংলিশদের বড় শক্তি ভাবা হচ্ছে তাদের ব্যাটিং। পাশাপাশি তাদের স্পিনটাও যে দারুন কার্যকর এবং ভয়ংকর সেটা তারা প্রমাণ করেছে ক্যারিবীয়ানদের বিপক্ষে।
আর পেস আক্রমণতো রয়েছেই। তাই বলে ঘাবড়ে যাওয়ার পাত্র নয় বাংলাদেশ। স্পিনে বাংলাদেশ মোটেও পিছিয়ে নেই ইংলিশদের চাইতে। ব্যাটিংয়েও তাদের স্পিনারদের মোকাবেলা করার যতেষ্ট সামর্থ রয়েছে। দরকার কেবল মাঠে প্রতিফলন ঘটানো। যদিও ব্যাট হাতে আগের ম্যাচে বেশ ভাল করেছেন নাঈম-মুশফিকরা। সাকিবের ব্যাট হাসেনি। মাহমুদউল্লাহ, আফিফ, লিটনরা ব্যাটিংয়ে আরেকটু দায়িত্ব নিতে পারলে অভিষেকেই ইংলিশদের হারের স্বাদ দেওয়া সম্ভব হবে।
ওটিস গিবসন বলেন, ইংল্যান্ডের খুব দৃঢ় একটি ব্যাটিং লাইন আছে। তাই আমাদের নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে, যদি ওদের চ্যালেঞ্জ জানাতে চাই বা জিততে চাই। আমাদের টিম মিটিংয়েও এসব নিয়ে কথা হয়েছে। মিটিংয়ে যা নিয়ে কথা হয়েছে সে সব অনুশীলনেও কাজ করার চেষ্টা করেছি। এখন আমাদের যাই করতে হবে সেটা নিখুঁত হতে হবে। পাশাপাশি নিজেদের ওপর আস্থা রাখতে হবে।
এটা নিশ্চিত যে বাংলাদেশকে চেপে ধরার চেষ্টা করবে ইংল্যান্ড। পাশাপাশি একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৫৫ রান তুলতে চার উইকেট হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। কাজেই ওরা যে একেবারে সুযোগ দেবেনা তা কিন্তু নয়। তবে সে সব সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। মনে রাখতে হবে সুযোগ কিন্তু বেশি আসবে না। গিবসনের এইসব কথা যদি এখন ক্রিকেটারদের কানে প্রবেশ করে তাহলে সেটা হবে দলের জন্য মঙ্গল। ইংলিশদের বিপক্ষে অস্থির না হওয়ার বার্তা দিয়েছেন গিবসন। শান্ত থাকতে হবে এবং দক্ষতা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মনোযোগ দিতে হবে। আর সেটা পারলেই ইংলিশদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেকটা রঙিন হতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশংকিত হওয়ার কিছু নেই : সওজ
পরবর্তী নিবন্ধরাঙ্গুনিয়ায় ১৩ প্রার্থীর ৮ জনই পুরনো