আগামী বছর যারা হজে যেতে আগ্রহী, তাদের জন্য সাত মাস আগেই দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। সাধারণ প্যাকেজে হজ করতে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা এবং বিশেষ প্যাকেজের মাধ্যমে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। গত বছর সরকারিভাবে একটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই প্যাকেজের ব্যয় ধরা হয়েছিল ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় হজ প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে হজ প্যাকেজের বিস্তারিত জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। তিনি বলেন, মানুষ যেন হজে যেতে অনেক আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে পারে, সেজন্য এবার অনেক আগেই হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হল। যারা কম টাকায় হজে যেতে চান, তাদের জন্য এবার সুযোগ থাকছে। খবর বিডিনিউজের। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন হজ হতে পারে। গতবারের মতই এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১৭ হাজার হজে যেতে পারবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। বিশেষ হজ প্যাকেজের আওতায় মক্কার হোটেলে ২ ও ৩ সিটের রুম নেওয়া যাবে জানিয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, মক্কায় হারাম শরীফের চত্বর থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ মিটারের মধ্যে উন্নতমানের হোটেল, মদিনায় মারকাজিয়া এলাকায় আবাসন ব্যবস্থা, এক রুমে সর্বোচ্চ ৪ সিট থাকবে, মিনায় ‘এ’ শ্রেণির তাঁবুতে আবাসন ও বুফে খাবার ব্যবস্থা এবং মিনা–আরফাহ–মুজদালিফা–মিনায় যাতায়াতে প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য বাসে সিট নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, সাধারণ প্যাকেজে প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ সিট থাকবে। তবে প্যাকেজ আপগ্রেডেশনের সুবিধায় অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে মক্কার হোটেলে ২ ও ৩ সিটের রুম নেওয়া যাবে। সাধারণ প্যাকেজের ব্যয় গত বছরের চেয়ে ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কম। বিমান ভাড়া ২ হাজার ৯৯৭ টাকা কমিয়ে এক লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুটি হজ প্যাকেজ করার কারণে এবার যারা টাকা কম দিয়ে যাওয়া ইচ্ছা তারা সেই সুযোগটা (সাধারণ প্যাকেজ) পাচ্ছে। যারা আরাম–আয়েশে থাকতে চায় তারা একটু বেশি টাকা (বিশেষ প্যাকেজ) দিয়ে যাবে। দ্রুত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে হজযাত্রীর নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করা হবে জানিয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী বছরের ১ মার্চ থেকে হজ ভিসা ইস্যু শুরু হবে। ৯ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে।
সরকারি মাধ্যমের সাধারণ প্যাকেজ মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) বেসরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদের জন্য হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবে এবং হজযাত্রীদের জন্য অনুরূপ সুযোগ–সুবিধা নিশ্চিত করবে।
ধর্ম সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বলেন, একজন মানুষ হজে যাবে তার প্রস্তুতির দরকার আছে। সরকারের কাছে টাকা জমা দেবে। তাই আমরা তাদের সেই সময়টা দিচ্ছি। আশা করি আমরা সময় মত কাজটা করতে পারব, আমরা তাড়াহুড়ো করতে চাই না। এবার আমরা কোটাও আগে পেয়ে গেছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, বিমান ভাড়া নিয়ে তাদের আপত্তি আছে। বরাবরই বলেছি, বিমান ভাড়ার ক্ষেত্রে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নয়, একটি স্বতন্ত্র কমিটির মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে। যারা এভিয়েশন বোঝে, কত টাকা ভাড়া হওয়া উচিত সেটি তারা নির্ধারণ করবে। বিমান ভাড়া ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো এয়ারলাইন্স যদি সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে হজযাত্রীদের বহন করে সেক্ষেত্রে ভাড়া কম হয়, সেই ভাড়া যাতে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়, আমরা সেই দাবি উত্থাপন করেছি।