করোনাভাইরাসে চট্টগ্রামে মারা যাওয়াদের ৭৯ দশমিক ৫৮ (৮০) শতাংশের বয়স ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে। অথচ এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের মাত্র ২৮ দশমিক ৯৭ শতাংশের বয়স ৫০ বছরের বেশি। অর্থাৎ তুলনামূলমূলক বয়স্করা অন্যদের তুলনায় কম সংক্রমিত হয়েছেন। কিন্তু মারা গেছেন বেশি।
বয়স্কদের মৃত্যুর হার বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলছেন, সাধারণত বয়স্করা ‘কোমরবিডিটি’ (দীর্ঘমেয়াদী অন্যান্য রোগ)- তে আক্রান্ত। একই সঙ্গে বয়স বাড়ার সাথে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। ফলে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে তাদের মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে অন্যদের তুলনায়। তাই মৃত্যু কমাতে বয়স্কদের সংক্রমণ এড়ানোর উপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের পাশাপাশি নিয়মিত দীর্ঘমেয়াদী ওষুধ সেবন বা চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে দীর্ঘ মেয়াদী রোগ নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিচ্ছেন। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, সাধাণত দুই কারণে বয়স্কদের মৃত্যু হার বেশি হচ্ছে। প্রথমত বয়স্ক অধিকাংশ মানুষের কোমরবিডিটি আছে। যেমন ডায়াবেটিস, প্রেসার, হার্ট ডিজিজ, কিডনি ডিজিজ বয়স্কদের বেশি। এসব রোগ ইয়ং জেনারেশনের কম। দ্বিতীয়ত পাশাপাশি বয়স্কতার কারণে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চট্টগ্রামে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে মারা যান ৪৮০ জন। এর মধ্যে ২৬৩ জনের বয়স ৬০ বছরে ঊর্ধ্বে। যা মোট মৃত্যুর ৫৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এছাড়া ১১৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর। যা মোট মৃত্যুর ২৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। বয়স্কদের বাইরে মারা যাওয়াদের মধ্যে ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী আছেন ৬১ জন বা ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী আছেন ২৩ জন বা ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী আছেন ৫ জন বা এক দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী আছেন ৫ জন বা এক দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সী আছেন ৪ জন। যা মোট মৃত্যুর মাত্র শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট শনাক্তের ১৩ হাজার ৮৬১ জনের বয়স ৫০ বছরে ঊর্ধ্বে। এর মধ্যে ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে আছেন ৬ হাজার ৫০৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সের আছেন সাত হাজার ৩৫২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী আছেন ৮ হাজার ৯১৮ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী আছেন ১১ হাজার ৩৩৮ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী আছেন ৩ হাজার ৩৬১ জন এবং শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সী আছেন এক হাজার ২১৫ জন।