দেশের ইতিহাসে একমাত্র আওয়ামী লীগই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে মন্তব্য করে দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা কিন্তু সব সময় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চাই। খবর বাংলানিউজের।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) জাতীয় সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে দেশের জনগণ পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল ৯৬ সালের ৩০ মার্চ। এরপর যে নির্বাচন হয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারে আসে। ২০০১-এ আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সেই ক্ষমতা হস্তান্তর করি। তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসে এ একবারই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয় সেটা আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় তখন। অন্য কোনো সময় না। আমরা কিন্তু সব সময় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চাই, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ এর নির্বাচনে তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার, আমরা কিন্তু খুব শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করি। সার্বিক চিত্রটা যদি দেখেন দেশের ইতিহাসে ওই একবারই। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সংবিধান দিয়ে ৭৩ সালে নির্বাচন দেন। ৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল। এ যে ক্ষমতা দখলের পালা শুরু এরপর আর কোনোদিনই দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা রদবদল হয়নি। প্রতিটা সময় আমরা আন্দোলন করে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছি। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন ইলেকশন করল খালেদা জিয়া। জনগণ একটা ভোটও দিতে পারেনি। আমরা জনগণকে আহ্বান করলাম, আন্দোলন হলো, ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল পদত্যাগ করতে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। আমরা এ তৃতীয়বারের মতো এখন সরকারে। অন্তত এটুকু দাবি করতে পারি এ ১৪ বছরে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, আমাদের দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। রিজার্ভ নিয়ে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এখন যে রিজার্ভ তাতে তিন মাস না, আমরা পাঁচ মাসের আমদানি করতে পারি। সেই পরিমাণ অর্থ আমাদের কাছে আছে। রিজার্ভ নিয়ে সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, কিছুদিন থেকে শুনতেছি যে আমাদের দেশের সবাই রিজার্ভ ও অর্থনীতি সম্পর্কে ভীষণভাবে পারদর্শী হয়ে গেছেন। গ্রামে গ্রামে চায়ের দোকানেও রিজার্ভ নিয়ে কথা।… একটা গুজব ছড়াচ্ছে টাকা ব্যাংকে নেই, টাকা পাবে না। সবাই টাকা ব্যাংক থেকে তুলে ঘরে রাখে। ঘরে টাকা রেখে তো চোরকে সুযোগ করে দেওয়া, তাই না? চোরের পোয়াবারো। তারা বেশ ভালোভাবে জানবে ওই বাড়িতে টাকা আছে, যাই চুরি করি। এখন সে চোরের হাতে তুলে দেবে না ব্যাংকে টাকা থাকবে, সে টাকার মালিক যারা তাদের ওপর নির্ভর করে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। রিজার্ভ রেখে গিয়েছিল ২.৫৭ বিলিয়ন ডলার। আমরাই উদ্যোগ নিয়ে সেই রিজার্ভ কিছুটা বাড়াই। ভোগ্য পণ্যের কোনো অসুবিধা হবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, ইউক্রেন থেকে, রাশিয়া থেকেও আমরা আমদানি শুরু করেছি। যদিও স্যাংশনের কারণে ডলারে পেমেন্টে অসুবিধা আমরা বিকল্প ব্যবস্থা কীভাবে করা যায় তার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।