বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের পর কমিশন সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্ত জানান। এর ফলে, এ দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ হয়ে গেল।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার যেহেতু সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সব ধরনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, সেহেতু বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসাবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন (নম্বর–০০৬ তারিখ: ০৩/১১/২০০৮) স্থগিত করল। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
গত শনিবার আওয়ামী লীগের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। জুলাই আন্দোলন দমনে ‘মানবতাবিরোধী’ অপরাধের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরপর সোমবার বিকালে আসে নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন। ওই প্রজ্ঞাপন জারির পর সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকেই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসে।
বৈঠকের পর ইসি সচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন যে আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গ সংগঠন ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। তার ধারাবাহিকতায় ইলেকশন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করা হল। সে অনুযায়ী আমরা গেজেট নোটিফিকেশন জারি করেছি।’ ইসি সচিব বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে প্রজ্ঞাপন, তার ধারাবাহিকতায় আমরা এটা করেছি।’ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
কমিশন সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ, আইন শাখার যুগ্ম সচিব ফারুক আহমেদসহ কর্মকর্তারা সেখানে আইনি দিকগুলো তুলে ধরেন।
২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের নিয়ম চালু করে নির্বাচন কমিশন। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন নম্বর ছিল ৬, প্রতীক নৌকা। গত ১৭ বছরে সব মিলিয়ে ৫৫টি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হলেও বিভিন্ন কারণে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত হওয়ায় এখন নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল থাকল ৪৯টি।