ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে দলীয় কোন্দলের জেরে আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম ইকবাল আজাদকে বল্লম ও লোহার রড দিয়ে হত্যা মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া এ মামলায় ১০ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক হালিম উল্লাহ চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় দণ্ডপ্রাপ্ত সবাই কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি হলেন, সরাইল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা রফিক উদ্দিন ঠাকুর, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মাহফুজ আলী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ইসমু আলী এবং মোকারম আলী সোহেল। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার ও ইদ্রিস আলী, আ. লীগ কর্মী সিজার, বাবু, হারিছ, বকুল, লিমন, আবদুল্লাহ, শরীফ ও মিজান। ট্রাইব্যুনালের পিপি অশোক কুমার দাশ আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এ মামলায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন হয়েছিল। কিন্তু পাঁচজনের বিষয়ে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিচারক তাদের খালাস দিয়েছেন। বাকি ১৪ জনের মধ্যে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন বলেও জানান আইনজীবী অশোক কুমার দাশ।
আদালতসূত্র জানায়, সরাইলে যুবলীগের কমিটি গঠনসহ নানা বিষয়ে এ কে এম ইকবাল আজাদ ও দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে বিরোধ ছিল। এসব কারণে ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর সরাইল থানার পাশে এ কে এম ইকবাল আজাদকে বল্লম ও লোহার রড দিয়ে আঘাত করা হয়। এতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আজাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ–যুবলীগের ২৯ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।
আদালতসূত্র আরো জানায়, ঘটনার সময় এ কে এম ইকবাল আজাদ সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ছিলেন। তার স্ত্রী উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম প্রকাশ শিউলি আজাদ বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের তিনজনের আংশিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।