পদত্যাগের পর দেশত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে একটি অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় দায়ের করা হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহীদ আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবিরের পক্ষে গতকাল বুধবার আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় কো–অর্ডিনেটর বরাবর এ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ রেজিস্ট্রারভুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩–এর ৮ ধারা অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করা হয়েছে। খবর বাসসের।
আবেদনে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটনার তারিখ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া এ সময়ে আহত হয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন তারিখে নিহতরা এর আওতায় থাকবে। ঘটনার স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সমগ্র বাংলাদেশকে।
অপরাধের ধরণে বলা হয়েছে, আসামিদের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র–জনতাকে হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘঠনের অপরাধ। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং তৎকালীন সরকারের কতিপয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান ও কতিপয় অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ ও কতিপয় অসাধু র্যাব কর্মকর্তা ও সদস্যসহ অজ্ঞতনামা অস্ত্রধারী আওয়ামী লীগ , ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী, সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনসমূহ। অভিযোগে বাদী ও অন্যান্য সাক্ষীদের পাশাপাশি গত ১৬ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ডকুমেন্টস হিসেবে দাখিল করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ গ্রহণ করে।