উচ্চগতির ইন্টারনেট প্রটোকল (আইপি) ক্যামেরার আওতায় আসছে চট্টগ্রামের অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। অত্যাধুনিক এই ক্যামেরা শুধু চিত্রধারণই নয়, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি শনাক্ত করবে দাগি অপরাধীদের। ক্যামেরার চোখ ফাঁখি দিয়ে পালাতে পারবে না কোনো চিনতাইকারী ও মোটরসাইকেল চোরেরা। এছাড়া পতেঙ্গার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই ক্যামেরা। এসব ক্যামেরার মাধ্যমে পতেঙ্গা সৈকতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের চিত্র একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষে বসে পর্যবেক্ষণ করবে পতেঙ্গা মডেল থানা পুলিশ।
জানা গেছে, সমুদ্র সৈকত এলাকা, প্রধান সড়ক, বার্মিজ মার্কেট, বাসস্টপিজসহ পতেঙ্গার দশটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আড়াই লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৩২টি আইপি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। ইতোমধ্যে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১৫টি আইপি ক্যামেরা স্থাপনা করা হয়েছে। বাকি ক্যামেরাগুলো আগামী একমাসের মধ্যে স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে পতেঙ্গা মডেল থানার এমন উদ্যোগের পাশে দাঁড়িয়েছেন পতেঙ্গা সৈকতের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে বিচ কমিউনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক মো. মুসা আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, মার্কেট কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতায় ও পতেঙ্গা থানার সদ্য যোগদানকারী ওসি সাহেবের আন্তরিকতায় পুরো সৈকত এলাকা আইপি ক্যামেরার আওতায় আসছে। ইতিমধ্যে সৈকতের দশটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১৫টি আইপি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রেমে ৩২টি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। এসব ক্যামেরা দিয়ে অপরাধে জড়িত যানবাহন ও অপরাধীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, পতেঙ্গা সৈকতকে একটি উন্নতমানের পর্যটননগরী হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর। এক্ষেত্রে প্রশাসনকে বিচ কমিউনিটি পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, পতেঙ্গা সৈকতে প্রতিদিনই চট্টগ্রাম নগর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন হাজার-হাজার পর্যটক। পাশাপাশি পুরো এলাকায় রয়েছে চার লাখের অধিক বাসিন্দা। পর্যটক এবং সৈকত এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপ্তার জন্য সিসি ক্যামেরা খুবই প্রয়োজন ছিল। সৈকতে এসব ক্যামেরা বসানোর ফলে পর্যটক ও এলাকাবাসীর নিরাপত্তার আর কোনো ঘাটতি থাকবে না।
এ বিষয়ে পতেঙ্গা মডেল থানার ওসি জোবায়ের সৈয়দ দৈনিক আজাদীকে বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে পতেঙ্গা সৈকতে ৩২টি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। প্রথম ধাপে সৈকতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১৫টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বাকিগুলো আগামী একমাসের মধ্যে বসানো হবে। চট্টগ্রামের খুবই গুরুত্ব একটি এলাকা পতেঙ্গা সৈকত। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের কারণে পতেঙ্গা সৈকত অনেকটাই সিঙ্গাপুরের মতো হয়ে গেছে। ফলে আগের তুলনায় এখন পর্যটক অনেগুণ বেড়ে গেছে। পাশাপাশি করোনার সময়ে হঠাৎ চুরি ছিনতাইসহ নানা অপরাধ বেড়ে গেছে। এসব অপরাধীদের ধরতে ক্যামেরাগুলোর একটি বড় ভূমিকা থাকবে। আশা করছি পতেঙ্গাবাসী এই ক্যামেরার সুফল পাবে।
এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের এসআই প্রদীপ দত্ত বলেন, পতেঙ্গা সৈকতে দিন দিন পর্যটক বেড়ে যাওয়ায় আমাদের ডিউটি বাড়লেও অপরাধীরা নানা কৌশলে মোটরসাইকেল চুরিসহ কিছু ছোটখাট অপরাধ সংঘটিত করে যাচ্ছে। সৈকতে এসব ক্যামেরা স্থাপনের ফলে চুরি, ছিনতাইয়ে জড়ির অপরাধীরা সহজেই ধরা পড়বে। ফলে সৈকতের অপরাধ আগের তুলনায় অনেকটা কমে আসবে। পাশাপাশি এসব ক্যামেরা পর্যটকদের নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার করা হবে।
পতেঙ্গার স্থানীয় বাসিন্দা সমাজসেবক ওয়াহিদ হাসান বলেন, বর্তমানে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিদিনি পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। লিংক রোড আর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে সৈকত এলাকার চেহারা পাল্টে গেছে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে প্রশাসনের এ ধরনের পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রাখবে।