আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যবহৃত গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সরঞ্জামের অবৈধ ব্যবহার বাড়ছেই। এসব সরঞ্জামের অবৈধ বিক্রি ও ব্যবহার রুখতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। গঠিত হয়েছে বিশেষ টিম। যেন পুলিশ সদস্য ছাড়া কেউ বাহিনীটির পোশাক ও সরঞ্জাম কিনতে না পারে। টিমটি বিক্রেতাদের রেজিস্ট্রার নিয়মিত চেক করছে। যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে ক্রেতাদের পরিচয়। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশ মেনে অবশ্যই পোশাক ও সরঞ্জাম বিক্রি করতে হবে। অন্যথায় বিক্রেতার লাইসেন্স বাতিলসহ আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ পোশাক ও সরঞ্জাম রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্ক জ্যামার, রিপিটার, মোবাইল বুস্টার, স্পাই ক্যাম, দূরনিয়ন্ত্রিত বিশেষ ড্রোন, এনক্রিপটেড অ্যাপস, হ্যান্ডকাপ বা হাতকড়া, ডিবি ও র্যাবের জ্যাকেট, ওয়াকিটকি। এসব সরঞ্জাম ও পোশাক সাধারণের কাছে আমদানি, বিক্রি, কেনা এবং ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে সাধারণ কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনোটি ব্যবহার করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু নিষিদ্ধ এসব সরঞ্জাম দোকানে বিক্রি হচ্ছে; কিনছে অপরাধী ও সাধারণ মানুষ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিসংখ্যান বলছে, অবৈধভাবে এগুলো আমদানি, মজুত, বিক্রি ও ব্যবহার বাড়ছে। পুলিশের সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বলেন, এসব অপকর্ম যারা করে তারা সুযোগ পেলে করবেই। সব জায়গায় খারাপ লোক–ভালো লোক থাকে।
এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্থাগুলোকে আরও সচেতন হতে হবে। যেখান থেকে এসব পোশাক তৈরি করা হয়, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। এসব পোশাক যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া বাইরে না যায়, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। র্যাবের গণমাধ্যম ও আইন শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, র্যাব কয়েক বছর ধরে এসব অসাধু ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌথভাবে অভিযান চালাচ্ছে। ভবিষ্যতেও তা চলবে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার নয়াপল্টনে অবস্থিত পলওয়েল সুপার মার্কেটটিতে সবচেয়ে বেশি পুলিশ বাহিনীর পোশাক ও সরঞ্জাম বিক্রি হয়। দেশের অধিকাংশ পুলিশ সদস্যই মার্কেটটি থেকে পোশাক কেনা বা তৈরি করে থাকেন। বিক্রি করা সরঞ্জামের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হ্যান্ডকাপ। এছাড়া রয়েছে লেজার লাইট ও পিস্তল রাখার হোলস্টারসহ আনুষঙ্গিক কিছু সরঞ্জাম। পুলিশের পোশাক ও সরঞ্জাম বিক্রিতে অনিয়ম ঠেকাতে বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। টিম সদস্যরা ছদ্মবেশে নিয়মিত পুলিশের পোশাক ও সরঞ্জাম বিক্রির দোকানগুলোতে নজরদারি করছেন।