ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে ১৫ লাখ টাকার চেক দেয়ার অভিযোগ এনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন নামের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদকের পাশাপাশি চট্টগ্রাম আদালতের অতিরিক্ত পিপি হিসেবেও কর্মরত আছেন। গতকাল সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এস কে তোফায়েল হাসানের কাছে মামলাটি করেন সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসেন কবির। আদালত মামলাটি গ্রহণ এবং শুনানি শেষে আনীত অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে নির্দেশ দেন। বাদীর আইনজীবী মির্জা কচির উদ্দিন আহমেদ আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৩/২৫(১)(ক)/২৯(১)/৩১(১) ধারায় করা মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন, “সাংসদ মোছলেম উদ্দিন চৌধুরীকে জড়িয়ে গত ৬ জানুয়ারি মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন মিথ্যা, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দুরভিসন্ধিমূলক একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। যেখানে তিনি লিখেন, ‘আসন্ন ১৭ নং সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পাইয়ে দিবে বলে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুসেইন কবির, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপির নাম দিয়ে আমার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকার চেক নিয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমাকে মনোনয়ন দেয়া তো দূরে থাক, কেন্দ্রে আমার নামটি পর্যন্ত পাঠায়নি। এখন আমি আমার চেক ও টাকা ফেরত চাই।’ আরজিতে বাদী আরো উল্লেখ করেন, “প্রকৃতপক্ষে ওই ব্যক্তির সাথে তার এবং এমপি মোছলেম উদ্দিন আহমেদের কোনো সম্পর্ক, যোগাযোগ, দেখাসাক্ষাৎ নাই ও কথাবার্তা হয় নাই এবং কোনো লেনদেন নাই এবং লেনদেন থাকার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। এমন অবস্থায় তিনি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে আমার ও এমপির সাথে শঠতা ও প্রতারণা, এমকি হেয় প্রতিপন্ন ও মারাত্মকভাবে মানহানি করেন।”
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া স্ট্যাটাসের সাথে একটি চেকের ছবিও দেন কামাল উদ্দিন। যেখানে দেখা গেছে, চেকটি সোনালী ব্যাংক কোর্ট হিল শাখার। মোছলেম উদ্দিন আহমেদে নামে ইস্যু করা চেকটির নিচে কামাল উদ্দিনের স্বাক্ষর রয়েছে। তবে ওই চেকে কোনো তারিখ লেখা ছিল না। তবে শুক্রবার থেকে তার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাসটি আর দেখা যায়নি। তবে শনিবার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি খোলা চিঠিও লেখেন তিনি। এবিষয়ে মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন আজাদীকে বলেন, ‘মামলার আবেদনে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানহানিকর। আমি আইনীভাবে মোকাবেলা করব।’
বার্তা সংস্থা বিডিনিউজ জানায় : মামলার বাদী এজাহারে বলেছেন, সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদের সম্মতি নিয়ে তিনি মামলাটি করেছেন। এ মামলায় সাংসদকে সাক্ষীও করা হয়েছে।
সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন বিডিনিউজকে বলেন, ‘আমার চরিত্র হননের জন্য কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব করছে। কামাল উদ্দীন নামের ওই লোকের সাথে আমার কোনো কথাবার্তাই হয়নি। মনোনয়নের জন্য তৃণমূল থেকে তালিকা চাওয়া হয়েছিল। তারপর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মত নেওয়া হয়। এরপর নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়। কারও সাথে লেনদেনের প্রশ্নই আসে না। আমার নাম ব্যবহারেরও কোনো সুযোগ নেই।,