বাংলাদেশের স্বনামধন্য আইনজীবী, ন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বিশেষ উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এ আর ইউসুফ-এর স্মরণসভা সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।
এই অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য রাজনীতিবিদ, বিচারক, আইনজীবী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তার কর্মময় জীবন ও অবদান নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও স্পিকার এবং বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। তিনি বলেন, ‘ব্যারিস্টার এ আর ইউসুফ শুধু একজন খ্যাতনামা আইনজীবী নন, তিনি বাংলাদেশের আইন অঙ্গনে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার সততা ও নৈতিকতার আদর্শ আমাদের সবার জন্য শিক্ষণীয়।’
বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ রেজাউল হক এবং আপিল বিভাগের বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক। অনুষ্ঠানে আরও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং গেস্ট অফ অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
আরো উপস্থিত ছিলেন, হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি ( অব:) ও বিনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী, হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি ( অব:) এ. এফ. এম. আব্দুর রহমান, সিনিয়র আইনজীবি ও বাংলাদেশের সাবেক এটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক বিএনপির সাংসদ অ্যাডভোকেট ফেরদাউস আক্তার ওয়াহিদা।
বক্তারা ব্যারিস্টার এ আর ইউসুফের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁরা উল্লেখ করেন, তিনি ১৯৯২ সালে অধ্যাপক গোলাম আজমের নাগরিকত্ব মামলা দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করে ইতিহাস গড়েন। ছাত্রজীবনে তিনি ন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফেডারেশন (এনএসএফ) প্রতিষ্ঠা করেন এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তীতে তৎকালীন গভর্নর মোনায়েম খান এনএসএফ’র নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি এই দল থেকে বেরিয়ে আসেন।
বক্তারা আরও বলেন, মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তিনি সততার মূর্ত প্রতীক ছিলেন। মন্ত্রী হিসেবে কম আয় হওয়ায় তিনি মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়ে তার আইন পেশায় ফিরে আসেন, যা তার নৈতিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তার সততা, আদর্শ এবং পেশাগত জীবনের নিষ্ঠা আমাদের জন্য পথপ্রদর্শক। তার আদর্শ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তা জানাতে হবে।
ব্যারিস্টার এ আর ইউসুফ ১৯৩২ সালের ১ জুলাই দিল্লিতে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার দাদা ব্রিটিশ ভারতে এসডিও হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মন্ত্রী থাকাকালীন তিনি ফিলিস্তিনের কিংবদন্তি ইয়াসির আরাফাত, ইরাকের সাদ্দাম হোসেন, ভারতের রাজীব গান্ধী, পাকিস্তানের মোহাম্মদ জিয়া-উল-হক, শ্রীলঙ্কার জে আর জয়াবর্ধনে, ভুটানের রাজা জিগমে সিংগে ওয়াং চুকসহ আন্তর্জাতিক নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। ২০০২ সালের ১১ জানুয়ারি শুক্রবার মাগরিবের নামাজের সময় তিনি ইন্তেকাল করেন।’
অনুষ্ঠানে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং দেশ ও জাতির জন্য তার অবদান চিরস্মরণীয় রাখার আহ্বান জানানো হয়।