আ. লীগ রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না : তথ্য উপদেষ্টা

| বৃহস্পতিবার , ২৪ অক্টোবর, ২০২৪ at ৭:৫৩ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিস্ট দল; ফলে তাদের আর রাজনীতিতে ফিরতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, এখন বিতর্ক হচ্ছে, আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে কি না? আপনারা আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দল বলছেন, তখন প্রশ্ন আসে ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক কাঠামোতে কীভাবে রাজনীতি করতে পারে? সুতরাং আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না। যদি আওয়ামী লীগ ফিরে আসে তাহলে গণঅভ্যুত্থান ও শহীদদের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে। আমাদের জীবন থাকতে তা হতে দেওয়া হবে না। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থানের সরকার, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা নিয়মতান্ত্রিকভাবে পদত্যাগ করেনি, এটা আমাদের সবার কাছে স্পষ্ট। তার পতন হয়েছে, তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে বাংলাদেশের ছাত্রজনতা। যে দলকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে, সেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার থাকবে কিনাএ নিয়ে কোনো দ্বিধার অবকাশ নেই।

তিনি বলেন, বিগত ওয়ানইলেভেনের সময় থেকে ফ্যাসিবাদের সূত্রপাত ঘটে। সে সময় থেকে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালের পর থেকে ছাত্র নেতৃত্ব গড়ে উঠেছে জুলাই আন্দোলনের। সরকার এটিকে রাজনৈতিকভাবে দমন করতে চেয়েছিল। একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ নিহত হলে, জনগণ রুখে দাঁড়ায়। যখন আমাদের রাজাকার বলা হয়, তখন শিক্ষার্থীদের আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগে। ফলে আমরা যে লড়াই করেছি, তা আমাদের মর্যাদা রক্ষার লড়াই।

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে পাওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে তুলনা করছেন। এটি সম্পূর্ণ ভুল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি নির্ধারিত সময়ের জন্য দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচন আয়োজন করে এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনপ্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু এবারের সরকার গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা পূরণে সংস্কার করে যেতে না পারলে, আমাদের গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা মসৃণ হবে না। তাই আমাদের কিছু মৌলিক সংস্কার করতে হবে। আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা দলের কর্মীদের দায়িত্ব না নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন এবং তিনি আর দেশে ফিরবেন না। শেখ হাসিনাকে কেবল বিচারের জন্য দেশে আনা হবে। তাই আপনারা (আওয়ামী লীগ) যারা দেশে রয়েছেন, দিবাস্বপ্ন দেখছেন, তাদের উচিত সমাজে সন্ত্রাসী কার্যক্রম না করে আত্মসমর্পণ করা। তাহলে হয়তো শাস্তি কিছুটা কম হতে পারে।

আলোচনা সভায় জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য মুশফিকুস সালেহীনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিটির সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদুর রহমান, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাষ্ট্রপতিকে নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি : প্রেস সচিব
পরবর্তী নিবন্ধরাষ্ট্রপতির থাকা না থাকা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, সাংবিধানিক নয় : নাহিদ