বাংলাদেশে অঙফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কিনা, তা খুঁজে দেখতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেছেন, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো প্রমাণ পেলে ওইসব টিকা দেওয়া হবে না। তবে যতক্ষণ সেরকম কোনো প্রমাণ না পাব, ততক্ষণ আমরা এই টিকা উঠিয়ে নেব না। অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড ও ভ্যাক্সজেভরিয়া টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে মামলা এবং এসব টিকা বিশ্ববাজার থেকে সরিয়ে নেওয়ার আলোচনার মধ্যে এ কথা জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল বুধবার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী বলেন, ওই টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়ে তিনি শুনেছেন। কিন্তু বাংলাদেশ এ ধরনের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আমি ডিজি হেলথকে নির্দেশ দিয়েছি। যাদেরকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে, তাদের ওপর সার্ভে করে আমাকে প্রতিবেদন দেবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা প্রমাণ না পাব, ততক্ষণ আমরা এই টিকা উঠিয়ে নেব না। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু হয়। শুরুতে সবাইকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাই দেওয়া হয়। পরে চীন থেকে সিনোফার্মের টিকা কেনে সরকার। কোভ্যাঙ থেকে মার্ডানার টিকাও আসে। চতুর্থ ডোজে বয়স্কদের দেওয়া হয় ফাইজারের টিকা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, এ পর্যন্ত দেশে ১৫ কোটি ৯ লাখের বেশি টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। ১৪ কোটি ২২ লাখের বেশি মানুষ দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে। সেইসঙ্গে ৬ কোটি ৮৬ লাখের বেশি তৃতীয় ডোজ এবং ৫১ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি চতুর্থ ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৭ ডোজ দেওয়া হয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।
গত ফেব্রুয়ারিতে সেখানকার একটি আদালতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে, খুবই বিরল ক্ষেত্রে কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, যার ফলে টিটিএস বা থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম হতে পারে। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে মঙ্গলবার থেকে বিশ্ববাজার থেকে কোভিড টিকা তুলে নেওয়ার কথা জানিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। বাংলাদেশ থেকে এ টিকা প্রত্যাহারের ব্যাপারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, টিকাদান কার্যক্রমে অসাধারণ সফলতা অর্জনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভ্যাকসিন হিরো’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। জনবলের অপ্রতুলতা থাকা সত্ত্বেও সারাদেশে কর্মীরা নিরলসভাবে টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছেন। জনবল সংকট কাটিয়ে উঠতে অতি শিগগিরিই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।