কাপ্তাই লেকের পানি অস্বাভাবিক হারে হ্রাস পাচ্ছে। পানি কমে যাওয়ায় লেকের বিভিন্ন প্রান্তে যেসব টিলা এতদিন ডুবন্ত অবস্থায় ছিল সেগুলো দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। অনেক এলাকায় পানি এতটাই কমে গেছে যে, ছোট ডিঙ্গি নৌকাও চলাচল করতে পারছে না।
কাপ্তাই লেকে ইঞ্জিন বোটের চালক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, পানি কমে যাওয়ায় ঠিকমত নৌকা চালাতে পারছি না। কম পানির মধ্যে বোট চালাতে গিয়ে প্রায় সময় নৌকার ইঞ্জিনের পাখা মাটির সাথে লেগে পাখার ব্লেড ভেঙে যাচ্ছে। এতে আমরা চরম সঙ্কটের মধ্যে পড়েছি।
কাপ্তাই জেটিঘাট বোট চালক সমিতির সভাপতি মো. ইব্রাহিম জানান, লেকে পানি কম থাকায় যেখানে সেখানে বোট নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে নৌপথে যেতে অনেক দূর দিয়ে ঘুরপথে গন্তব্যে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে সময় বেশি লাগছে এবং জ্বালানি খরচও বাড়ছে। তিনি বলেন, অনেক বোট চালক বাধ্য হয়ে নৌকা চালানো বন্ধ রেখেছেন। লেকে পানি না বাড়লে নৌ চলাচল স্বাভাবিক হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে কাপ্তাই জেটিঘাট, নতুনবাজার ঘাট, ফিশারী ঘাট, কার্গো পারাপার, ব্রিকফিল্ডসহ সর্বত্র পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। অনেক স্থানে দেখা গেছে নৌকাগুলো ডাঙ্গায় আটকে আছে। জেলে পাড়ার হিমেন্দ্র জলদাশ জানান, রাতে ঘাটের তীরে ডিঙ্গি নৌকা বেঁধে রেখেছিলাম। সকালে দেখি নৌকা শুকনো মাটিতে আটকে পড়ে আছে। ভারি বৃষ্টিতে লেকে পানি বৃদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত নৌকা এভাবে মাটিতে আটকা পড়ে থাকবে বলেও তিনি জানান।
কাপ্তাই লেকে পানি কমে যাবার সত্যতা নিশ্চিত করে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এটিএম আব্দুজ্জাহের বলেন, সাধারণত মার্চ, এপ্রিল, মে মাসে বৃষ্টিপাত কম থাকে। সে কারণে কাপ্তাই লেকের পানিও কমে যায়। যে কোন সময় বৃষ্টি হতে পারে। টানা কয়েকদিন ভারি বৃষ্টি হলে কাপ্তাই লেকে পানি বাড়বে বলে তিনি জানান।
স্থানীয় সজল দাশ ও বোরহান উদ্দিন জানান, প্রায় প্রতিদিন আকাশে মেঘ দেখি। মনে হচ্ছে আজ বৃষ্টি হবে। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। প্রচণ্ড গরমে অনেকেই হিট স্টোকে কষ্ট পাচ্ছেন। এই গরমে শরীর সুস্থ রাখতে বেশি করে পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।