নগরীর পাহাড়তলী থানাধীন উত্তর কাট্টলী খেজুরতলী জাইল্যাপাড়া থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ ৩ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ চক্রের সদস্যরা মাইক্রোবাসে যাত্রী তুলে ছিনতাই করে আসছিল ১০ বছর ধরে। চক্রের সদস্যরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মাইক্রোবাসে যাত্রী তুলে ছিনতাই করলেও তারা কেউই চট্টগ্রামের বাসিন্দা নয়, তাদের বাড়ি বরিশাল অঞ্চলে। মূলত চট্টগ্রামে এসে ছিনতাই করে তারা নিজ এলাকায় চলে যেত। এ চক্রের ১০ সদস্যের মধ্যে নয়জন গ্রেপ্তার হয়েছে। আগে ছয়জনকে গেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের কাছ থেকে একটি দোনলা বন্দুক, দুইটি এলজি, ৪ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে নগরের চান্দগাঁও র্যাব ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বরিশালের কাউনিয়া থানার ভাটিখানার মৃত মনোয়ার হোসেনের পুত্র মো. সরোয়ার হোসেন ওরফে জনি ওরফে মনু (৩৪), বরগুনা জেলার তালতলী থানার বড়ইতলা পাওয়াপাড়ার মৃত হযরত আলীর পুত্র মো. রিপন (৩২) ও একই জেলার তালতলী থানার ছোটতালতলী চাঁন মিয়ার বাড়ির মিজানুর রহমান প্রকাশ চাঁন মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৩৬)।
র্যাবের জিজ্ঞাসায় তারা চাঞ্চল্যকার তথ্য প্রদান করে। তারা জানায় ভোর রাতে মাইক্রোবাস সংগ্রহ করে যাত্রী সেজে তারা গাড়িতে উঠে একেক জন একেক সিটে বসে কেউ তসবি পড়তে থাকে, কেউ ভদ্রভাবে বসে থাকে। গাড়িতে আগে থেকে বসে থাকা ডাকাতদের নম্র, ভদ্র ব্যবহার দেখে সহজ সরল যাত্রীরা কম টাকায় গন্তব্যে পৌছার জন্য ডাকাতদের গাড়িতে উঠে। গাড়িতে উঠার পর ডাকাতরা বিভিন্ন ধর্মীয় কথাবার্তা বলতে থাকে। কিছু দূর যাওয়ার পর ডাকাত দলের একজন বলে আমি সামনে নামব তখন ডাকাত দলের দুজন সামনের সিটে চলে আসে এবং টার্গেট যাত্রীকে মাঝখানের সিটে বসায়। তারপর শুরু হয় আসামিদের আসল রুপ। আসামিরা ভয়ভীতি দেখিয়ে, জিম্মি করে মারপিট করে, গলায় গামছা পেছিয়ে পিছনে টান দিয়ে ভীত সন্ত্রস্ত করে যাত্রীদের নিকট থেকে নগদ টাকা পয়সা, মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। যাত্রীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে। তাদের কাজ শেষ হলে চট্টগ্রাম হতে কুমিল্লার মধ্যবর্তী সুবিধাজনক স্থানে যাত্রীকে ফেলে দিয়ে চলে যায়। যাত্রীদের রাস্তার পাশে ফেলে দেয়ার আগে ভিকটিমের চোখে বিশেষ ধরনের রাসায়নিক মলম লাগায় যার কারণে মলমের বিষক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু দেখতে পায় না। এর মধ্যে ডাকাতরা নিরাপদ দূরত্বে চলে যায়। আসামি রিপন র্যাবের জিজ্ঞাসায় জানায় কিছুদিন পূর্বে মনু ডাকাত একই পদ্ধতিতে যাত্রী উঠিয়ে অনুরুপ পদ্ধতি অবলম্বন করে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে যাত্রীকে (ভিকটিম) রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়।