অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ১০ লাখ পরিবার পর্যাপ্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে সংগ্রাম করছেন বলে ফুডব্যাঙ্ক অস্ট্রেলিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সন্তানদের ক্ষুধা থেকে রক্ষা করতে এই পরিবারগুলোর বাবা–মা খাবার খাওয়া থেকে হয় বিরত থাকছেন অথবা সারাদিন অভুক্ত থাকছেন। খবর বিডিনিউজের।
প্রতিবেদনটিতে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, দেশটির আট লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি পরিবার যারা বছরে ৩০ হাজার অস্ট্রেলীয় ডলারেরও কম আয় করে তারাই এমন গুরুতর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ সংখ্যা ২০২২ সাল থেকে পাঁচ শতাংশ বেশি।
ফুডব্যাঙ্ক অস্ট্রেলিয়ার দাবি, তারা অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম ক্ষুধা ত্রাণ দাতব্য সংস্থা। তারা বলছে, একক অভিভাবকের পরিবারগুলোই সবচেয়ে কষ্টে আছে। এ ধরনের দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি পরিবার খাদ্য সংঙ্কটের মোকাবেলা করছে। এক বিবৃতিতে ফুডব্যাঙ্ক অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রিয়ানা কেইসি বলেছেন, আমরা এই জীবনযাত্রার ব্যয় সঙ্কটের শুরুতেই সতর্ক করেছিলাম যে সবসময় নিম্ন–আয়ের পরিবারগুলোই প্রথম থেকে ভুগতে শুরু করে, তারাই সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে সবচেয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগে। প্রাপ্ত তথ্যে এখন সেগুলো নিশ্চিত হয়েছে। আমরা এমন সব পরিবার দেখছি যারা কোনো রকমে বেঁচে আছে, তারা এখন তাদের সামর্থ্যের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে আর অকল্পনীয় সব বিকল্প বেছে নিচ্ছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বাড়িভাড়া, বিদ্যুৎ বিল ও মুদি পণ্যের উচ্চ মূল্যের মিলিত প্রভাবের কারণে লোকজন অপরিহার্য মৌলিক খাদ্যও কাটছাট করতে বাধ্য হচ্ছে; যদিও সমপ্রতি কিছু পরিবারে উন্নতির লক্ষণ দেখা গেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২২ সালে কোভিড–১৯ সীমান্ত বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের ঢেউ শুরু হলে ভাড়ার বাজারে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়, এর ফলে অস্ট্রেলিয়ার পরিবারগুলোকে কঠিন মুদ্রাস্ফীতি ও উচ্চ ব্যায়ের সঙ্গে ধারাবাহিক সংগ্রাম করে যেতে হচ্ছে। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দেওয়া শুরু করার পর মুদ্রাস্ফীতিতে এর আংশিক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে।
দৈনিকের শিরোনামগুলো জানাচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি সহনীয় হতে শুরু করেছে এবং অগাস্টে তা হ্রাস পেয়ে দুই দশমিক সাত শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এই পরিমাপে স্থিরতা নেই এবং একে অস্থায়ী প্রভাব হিসেবেই দেখতে হবে। ফুডব্যাঙ্ক অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবেদন বলছে, আত্মীয়–স্বজন ও বন্ধুরা আর সহায্য করার অবস্থায় না থাকায় আরও বেশি পরিবার খাদ্য ত্রাণ দাতব্য সংস্থাগুলোর দ্বারস্থ হচ্ছে।