সুন্দর সমাজের প্রত্যাশা আমাদের সকলের মাঝে বিরাজমান। আমরা চাই জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলেমিশে থাকি। আমরা আমাদের সুখ দুঃখগুলো একে অপরের সাথে ভাগাভাগি করে নিই। আমাদের একটি অসামপ্রদায়িক রাষ্ট্রের প্রত্যাশা। শুদ্ধ সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে নীরবে সমাজে অসামপ্রদায়িক চেতনার বীজ বপন করে চলেছে সাহিত্যপ্রেমী লেখক সমাজ।
লেখক, কবি, শিশুসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিকের কলমের আঁচড়ে উঠে আসছে স্বপ্ন পূরণের গল্প, হতাশা থেকে উত্তরণের গল্প, নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা, সর্বোপরি একটি সমাজকে আলোকিত করতে লেখকদের অবিরাম প্রচেষ্টা। লেখকদের শক্তি হলো পাঠকসমাজ। পাঠক লেখা পড়বে। ভালোটুকু গ্রহণ করবে খারাপটুকু বর্জন করবে এটাই প্রত্যাশা লেখকদের। সমাজে মানুষে মানুষে বৈষম্য থাকা উচিত নয়। সকলের প্রতি সমান শ্রদ্ধা ভালোবাসা থাকা প্রয়োজন। লেখকরা উদার মনের হয়। সমাজের অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয়গুলো তাদের লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেন।
কবি তার কবিতায় ফুটিয়ে তোলেন সুখ, দুঃখ আনন্দ বেদনার ছবি, প্রকৃতি প্রেম, প্রতিবাদ। গল্প নাটকও মানুষকে অনুপ্রেরণা যোগায় অবিরাম। সাহিত্যপ্রেমীরা বরাবরই অসামপ্রদায়িক চেতনার মানুষ হয়। তাদের চিন্তা চেতনায় উদারতা থাকে। সব সময় সুন্দর সৃষ্টির নেশায় বুদ হয়ে থাকে। সমাজের সকলে যদি বই, পত্র পত্রিকা, গল্প, উপন্যাস পঠনে রত থাকে তাহলে অবশ্যই অসামপ্রদায়িক চেতনার মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে। কেনো কলুষিত বিষয় তাকে স্পর্শ করবে না। যারা শুদ্ধ সাহিত্য চর্চা করে যারা লেখালেখির জগতে অবিরাম সৃজনশীলতায় ব্যস্ত তাদের ভেতর কখনো কোনো খারাপ চিন্তা চিন্তা আসতেই পারে না।
লেখক হলো অসামপ্রদায়িক সমাজ গঠনের সবচেয়ে শক্তিশালী একটি মাধ্যম। সাহিত্যের মধে যে রস রয়েছে তা লেখকের শিরা উপশিরায় এমনকি ধমনিতে যে শিল্পসত্তা তৈরি করতে সহায়তা করে। একজন প্রকৃত লেখক চেষ্টা করলেও অন্যায় অসত্য অসুন্দরকে মেনে নিতে পারে না। তার কলমে উঠে আসে প্রতিবাদের ভাষা। একটি দেশের সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করে অসামপ্রদায়িক চেতনার উপর। সামপ্রদায়িকতা সবচেয়ে ভয়াবহ এবং মারাত্মক ক্ষতিকারক একটি দিক। তাই আমাদের উচিত অসামপ্রদায়িক চেতনার মাধ্যমে দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। লেখকরা প্রকৃতিপ্রেমী। প্রকৃতি থেকে আমাদের শিক্ষার সুযোগগুলো লেখকেরা নানাভাবে পাঠকের সামনে তুলে ধরে। সমাজের অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরছেন নিয়মিত পত্র পত্রিকার মাধ্যমে। লেখকরাই পারে মুহূর্তের মধ্যে মানুষের চেতনাকে উজ্জীবিত করতে।
আজকের শিশুরা বই পাঠ করে নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করে চলছে। নিজেকে তৈরি করছে ভবিষ্যৎ এর যোগ্য নাগরিক হিসেবে। প্রজন্মকে অসামপ্রদায়িক চেতনার মানুষ হিসেবে তৈরি করতে লেখকরাই একমাত্র দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে চলছে সৃজনশীলতার বহুমাত্রিক বিকাশের মাধ্যমে।
বেশি বেশি করে বই পাঠের অভ্যাস গড়ে তুলুন আপনার সন্তানের মধ্যে। ছোট বড় সবাইকে বই পড়ায় মনোযোগী হতে হবে। মেধায় মননে প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণ করে সামপ্রদায়িকতার বিষবাষ্পকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করতে হবে। বাংলাদেশ হোক অসামপ্রদায়িক চেতনাসমৃদ্ধ রাষ্ট্র। আজকের শিশুদের আগামী দিনগুলো নিরাপদ হোক আমার সোনার বাংলায়। জয় হোক মানবিকতার, জয় হোক শান্তি সুন্দরের।