প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে ‘চোরাইপথে শত শত ট্রাক পেঁয়াজ’ প্রবেশের জেরে পাইকারীতে পেঁয়াজে রেকর্ড দরপতন হয়েছে। গত তিনদিনের ব্যবধানে দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি প্রতি দাম কমেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি অনেকদিন ধরে চোরাইপথে ভারতীয় পেঁয়াজ আসছিল। তবে হঠাৎ করে চোরাইপথে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ার কারণে দামও কমে গেছে অর্ধেক। অথচ যারা ভারতীয় পেঁয়াজ এনেছেন, তাদের এখন অনেক টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। কারণ এসব পেঁয়াজ বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে আনতে হয় বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি–১ (তাহেরপুরী), বারি–২ (রবি মৌসুম), বারি–৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারের ওপর খুব বড় প্রভাব ফেলে। চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম দৈনিক আজাদীকে বলেন, পেঁয়াজের সরবরাহ গত কয়েকদিনে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। যার ফলে দামও কমেছে অর্ধেক। পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য, চাইলেই মজুদ করে রাখা যায় না। সরবরাহ বেড়েছে তাই দাম কমছে। বাজারে এখন যে পরিমাণ পেঁয়াজ আছে, আগামী তিন মাস পেঁয়াজের সংকট হবে না।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, পেঁয়াজ পর্যাপ্ত এসেছে, তাই দামও কম। আসলে সরবরাহ বাড়লে দাম এমনিতেই কমে যায়। চাক্তাই আফরা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, পেঁয়াজের বাজার এখন অনেক কমে গেছে। অনেক ব্যবসায়ী লোকসান দিয়ে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কারসাজি নতুন কিছু নয়। ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করেন। তবে এখন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ার কারণে দাম কমছে। ব্যবসায়ীরা যেন কোনোভাবে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বৃদ্ধি করতে না পারে সেজন্য প্রশাসনকে বাজার মনিটরিং অব্যাহত রাখতে হবে।