অর্থ পিশাচদের রুখে দাঁড়ান গুজবে কান দেবেন না : সুজন

জাগরণ যাত্রা ও নাগরিক সমাবেশ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২০ জুলাই, ২০২১ at ৬:২০ পূর্বাহ্ণ

নগরীর ফুসফুস খ্যাত সিআরবিতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে চুক্তি স্বাক্ষরকারীদের প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে চসিকের সাবেক প্রশাসক এবং নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, অর্থ পিশাচদের রুখে দাঁড়ান, গুজবে কান দিবেন না। তিনি গতকাল সোমবার সবুজ প্রকৃতির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী জাগরণ যাত্রা ও বিশাল নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নগরবাসীর প্রতি এ আহবান জানান। মাথায় সবুজ পাতায় আচ্ছাদিত ব্যান্ড
মাথায় গাছের পাতা দিয়ে তৈরি বিশেষ ধরনের ব্যান্ড পরে নিজেরাই এক একটি গাছের প্রতীক হয়ে উঠে বিশাল সমাবেশে যোগ দেন অসংখ্য মানুষ। সমাবেশে খোরশেদ আলম সুজন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময়ই পরিবেশের পক্ষে। সবুজ জায়গা সংরক্ষণ, নদ-নদী উদ্ধারসহ পরিবেশ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে চলছেন। কিন্তু কিছু কুচক্রীমহল অত্যন্ত সূক্ষ্ণভাবে সরকারের সাথে জনগণের দূরত্ব সৃষ্টির অপপ্রয়াসে লিপ্ত রয়েছে। এখনই এদের রুখে না দাঁড়ালে এরা সরকারের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই এখনই তাদের বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা চট্টগ্রামবাসী সবসময় হাসপাতালের পক্ষে। আমাদের চট্টগ্রামে অনেক হাসপাতাল দরকার। বিশেষ করে বন্দর পতেঙ্গা এলাকায় একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরি নাগরিক উদ্যোগের দীর্ঘদিনের দাবি। তবে প্রাইভেট হাসপাতালের নামে জনগণের নিঃশ্বাস ফেলার পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে সবার দৃষ্টি রাখা একান্ত প্রয়োজন। আমরা চাইলে সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ করতে পারি কিন্তু কোনভাবেই আর সিআরবির শতবর্ষের সেই মনোরম পরিবেশ তৈরি করতে পারবো না।
সুজন বলেন, চট্টগ্রামে খেলার মাঠ নেই, খালি জায়গা নেই, আমাদের নতুন প্রজন্ম ইট পাথরের বিল্ডিংয়ে কিভাবে নিঃশ্বাস ফেলবে সে চিন্তাও কিন্তু করতে হবে। সব জায়গা জমি যদি আমরা এভাবে বাণিজ্যিকীকরণ করে ফেলি তাহলে এর কুফল সবাইকে ভোগ করতে হবে। অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে যারা বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করে বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন তারাই আজ গুজবের সৃষ্টি করছে। একেক সময় একেক কথা বলে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। এদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহবান জানান তিনি।
ইউনাইটেড গ্রুপের মালিকের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন আমি নিজেও ইউনাইটেড হাসপাতালের রোগী। তারপরও মানবিকবোধ বিবেকবোধ থেকে আমি এখানে এসে উপস্থিত হয়েছি। চট্টগ্রামের মানুষ আজ এই বিষয়টি নিয়ে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ। আপনি চট্টগ্রামে হাসপাতাল তৈরি করুন চট্টগ্রামবাসীর আপত্তি থাকবে না। চট্টগ্রামের জনগণের হৃদয়ের কান্নাকে পদদলিত করে এখানে হাসপাতাল নির্মাণ করতে যাবেন না। সেটা কখনোই ভালো ফল বয়ে আনবেনা। আমরা অবশ্যই আশা করি প্রধানমন্ত্রী প্রকৃতি ধ্বংস করতে দিবেন না। প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের জনগণের পক্ষেই সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন সে বিশ্বাস চট্টগ্রামবাসীর আছে।
গতকাল দুপুরের পর থেকেই নগরীর বিভিন্ন এলাকার সাধারণ নারী পুরুষ দলমত নির্বিশেষে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জাগরণ যাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। মাথায় সবুজ পাতায় আচ্ছাদিত ব্যান্ড, জাতীয় পতাকা, সবুজ পতাকা হাতে নিয়ে উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী বিনয় বাঁশী শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীদের ঢোলের তালে এবং সানাইয়ের সুরে জাগরণ যাত্রা সিআরবি সড়কের বাউবি আঞ্চলিক কেন্দ্রের সামনে থেকে শুরু হয়ে সিআরবি সাত রাস্তার মুখে এসে শেষ হয়। নাগরিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ। সদস্য সচিব মো. হোসেনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, মসিউর রহমান চৌধুরী, জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রপের মহাসচিব গোলাম রসুল বাবুল, আব্দুর রহমান মিয়া, রুহুল আমিন তপন, সাইদুর রহমান চৌধুরী, মাহবুবুল হক সুমন, শওকত হোসাইন, ফরহান আহমেদ, শফিউল আজম বাহার, মাঈনুল হক লিমন, কাউন্সিলর আব্দুস সালাম মাসুম, এনামুল হক মিলন, সমীর মহাজন লিটন, রকিবুল আলম সাজ্জী, রাজীব হাসান রাজন, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি এম ইমরান আহমেদ ইমু প্রমূখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের মন্ত্রী-এমপি ও রাজনৈতিক নেতারা কে কোথায় ঈদ করবেন
পরবর্তী নিবন্ধচামড়া, খাদ্য ও ওষুধ খাত আওতার বাইরে