অমূল্যকুমার দাশগুপ্ত (১৮৯৫– ১৯৭৩)। লেখক ও শিক্ষাবিদ। তিনি ‘সম্বুদ্ধ’ নামে খ্যাত। হাল আমলের পাঠকের কাছে অমূল্যকুমার দাশগুপ্ত খুব একটা পরিচিত নাম নয়। বাজার চলতি সাহিত্যের ইতিহাসের বইপত্রেও তাঁর প্রবেশাধিকার নেই বললেই চলে। তবে ‘সম্বুদ্ধ‘ নামে তাকে অনেকেই চেনে। এ নামেই লেখালেখি করতেন তিনি। বাংলা সাহিত্যে হাস্যরসের ধারা জাতীয় গ্রন্থে সম্বুদ্ধ ও তাঁর রচনা সম্বন্ধে কিছু বাক্য ব্যয় করা হয়েছে। তিনি মূলত শিশুদের জন্যই লিখতেন। তার জীবিতকালে এবং মৃত্যুর বেশকিছু বছর পরও অনেক শিশুর কাছে ছিলেন প্রিয় লেখক। অমূল্যকুমার দাশগুপ্ত ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ অক্টোবর বরিশাল জেলার নান্দিকাঠি থানার কুলকাঠি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অমূল্যকুমার দাশগুপ্ত ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এ. পাস করেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি বিপ্লবী সংগঠন অনুশীলন সমিতির একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে ব্রিটিশবিরোধী সহিংস আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে আলীপুর বোমা মামলায় ব্রিটিশ সরকার তাকে গ্রেফতার করে। বন্দি থাকা অবস্থায় কারাগার থেকে পরীক্ষা দিয়ে তিনি এম.এ. ও ল‘ পাস করেন। প্রায় পাঁচ বছর বন্দী থাকার পর ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন। কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পরের বছর ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বরিশাল বি.এম. কলেজে অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অধ্যাপনা শুরু করেন। এখানে প্রায় দুই বছর অধ্যাপনা করার পর দৌলতপুর বি.এল. কলেজ, গোপালগঞ্জ রামদিয়া শ্রীকৃষ্ণ কলেজ, পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজ ও কাঁথি পি.কে. কলেজে ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপনা করেন। অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি ১৯৪৬–৪৭ সাল পর্যন্ত আনন্দ বাজার পত্রিকা ও শনিবারের চিঠি‘র সহসম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। অমূল্যকুমার দাশগুপ্ত মুলত গল্প ও গোয়েন্দা কাহিনি রচনার মাধ্যমে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি তার লেখায় ব্যঙ্গ ও হাস্যরস সৃষ্টিতে তার পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ ‘ডায়লেকটিক’ (১৯৩৯) ‘শিকার কাহিনী’ (১৯৪৬) ‘ছেলেধরা জয়ন্ত’ (গোয়েন্দা কাহিনী; ১৯৬৬)। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন।