চিত্রনায়িকা পরীমনির দায়ের করা মামলার আসামি তুহিন সিদ্দীক অমির বিরুদ্ধে এবার মানবপাচার আইনে মামলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আব্দুল কাদের নামের এক ব্যক্তির দায়ের করা এই মামলার তদন্তভার নিয়ে সিআইডি গতকাল অমির একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তিনটি গাড়ি এবং ১৯টি হার্ড ডিস্ক জব্দ করেছে। পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দক্ষিণখান থানায় বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরে এই মামলা হয়। মামলায় অমিসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি সিআইডির তফসিলভুক্ত হওয়ায় তারাই তদন্ত করছে।’ খবর বিডিনিউজের।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, আশকোনা হাজ ক্যাম্প এলাকার আয়াত আরাফাত ট্রাভেল ট্যুর সার্ভিস নামের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তার পরিচিত দুইজনকে দুবাই পাঠানো হয়। কিন্তু যে চাকরি এবং বেতনের কথা বলা হয়েছিল, তার বদলে ভ্রমণ ভিসায় পাঠানোর ফলে তারা সেখানে মানবেতর জীবন যাপন করছে, ঘর হতে বের হতে পারছে না।’ এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি আরও দুইজনকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে প্রতারণা করেছে বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। তুহিন সিদ্দীক অমি আশকোনার আয়াত আরাফাত ট্রাভেল ট্যুর সার্ভিসের কর্ণধার বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা। তিনি ‘সিঙ্গাপুর ট্রেইনিং সেন্টার’ নামে প্রতিষ্ঠানও পরিচালনা করেন। সমপ্রতি চিত্রনায়িকা পরীমনির দায়ের করা ধর্ষণচেষ্টা, হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে মামলা করেন, যেখানে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমির নাম উল্লেখ করে মোট ছয়জনকে আসামি করা হয়। পরীমনির অভিযোগ, গত ৮ জুন রাতে তাকে বোট ক্লাবে নিয়ে গিয়েছিলেন অমি, সেখানে নাসির তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। পরীমনির মামলার পর ঢাকার উত্তরার এক নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে নাসির ও অমিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখান থেকে মদ ও ইয়াবা উদ্ধারের কথাও জানায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে বিমানবন্দর থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা হয়। সেখানেও অমিওকে আসামি করা হয়েছে।
এরপর ১৫ জুন রাতে দক্ষিণখান থানা এলাকায় অমির একটি অফিস থেকে ১০২টি পাসপোর্ট ও ১৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এতগুলো পাসপোর্ট রাখায় অমির বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনেও দক্ষিণখান থানায় হয়েছে।
সিআইডি কর্মকর্তা কাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, মানব পাচার আইনে করা মামলার তদন্তে নেমেই তারা শুক্রবার আশকোনায় অমির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অফিসে অভিযান চালান। তিনি বলেন, ‘সেখান থেকে আমরা বিভিন্ন মডেলের তিনটি দামি গাড়ি এবং অফিস থেকে ১৯টি হার্ড ডিস্ক জব্দ করেছি। প্রাথমিকভাবে গাড়িগুলো অমির বলে জানা গেছে।’ অমিকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ড চাওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, অন্য আসামিদের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।