অভিযানেও থামছে না ফসলি জমির মাটি কাটা

রাঙ্গুনিয়ায় বেপরোয়া মাটি ব্যবসায়ীরা

জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া | শনিবার , ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:১১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডার খ্যাত রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিলে টপ সয়েল কাটায় সম্প্রতি এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। কিন্তু এরপরও প্রকাশ্যে এই বিলের পূর্ব অংশে ইটভাটার কাছে মাটি কাটার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এভাবে অভিযানেও থামানো যাচ্ছে না রাঙ্গুনিয়ায় ফসলি জমির টপ সয়েল (ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি) কাটা। আর্থিকভাবে সাময়িকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় অনেক কৃষক তাদের জমির মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাপক হারে হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের বাইশ্যের ডেবা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এলাকার বিলজুড়ে চারপাঁচটি স্কেভেটরের সাহায্যে মাটি কেটে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব মাটি আবার অন্য ফসলি জমি ভরাট কিংবা ইটভাটায় বেশি ব্যবহার করা হয়। এভাবে মাটি কাটার ফলে জমিগুলো গর্ত হয়ে গেছে। মাটি নিতে ভারী যানবাহন ব্যবহার করায় রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

জমির মাটি বিক্রি করা বাইশ্যের ডেবা এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলামের দাবি, উঁচু হওয়ায় তার জমিতে এক মৌসুম চাষ হয়। তাই মাটি কাটিয়ে সমান করা হচ্ছে যাতে দুই মৌসুমে চাষাবাদ করা যায়। এতে জমির কোনো ক্ষতি হবে না বলে দাবি তার। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গুমাইবিল ছাড়াও ইসলামপুর, রাজানগর, দক্ষিণ রাজানগর, লালানগর, ব্রহ্মোত্তরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে ফসলি জমির মাটা কাটার মহাযজ্ঞ। প্রশাসনের চোখ এড়াতে এর সাথে জড়িতরা সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সোর্স লাগিয়ে রাখে। তাদের কাজ হচ্ছে প্রশাসনের গতিবিধির ওপর নজরদারির মাধ্যমে অভিযানের আগাম তথ্য জানিয়ে দেওয়া। এভাবেই মাটি ব্যবসায়ীরা ফসলি জমির মাটি কাটার অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এমনিতেই বেপরোয়া স্থাপনা নির্মাণের ফলে ফসলি জমির পরিমাণ কমে আসছে। তার উপর টপ সয়েল কাটা হলে জমির জৈব উপাদান চলে যায়। কারণ ফসলি জমির উপরিভাগের ১০ থেকে ১২ ইঞ্চির মধ্যে মাটির জৈব উপাদান থাকে। এতে জমির যে ক্ষতি হয় তা ৫০ বছরেও পূরণ হবার নয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান বলেন, ফসলি জমির টপ সয়েল কেটে নেওয়ার বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। স্থায়ীভাবে এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে ৪৭ রাউন্ড গুলিসহ যুবক গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধ২৮ দিনে আয় দুই কোটি ৬৩ লাখ টাকা