ভোগ্যপণ্যের বাজারে কয়েকটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। তবে পাইকারী থেকে খুচরা পর্যায়ের কোনো ব্যবসায়ী সেই দাম মানছেন না। অনেক সময় প্রশাসন র্অভিযানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সরকার নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য করেন। এছাড়া বিভিন্ন অনিয়মের দামে জরিমানা করা হয়। তবে অভিযান যতক্ষণ থাকে, দামও ঠিক ততক্ষণ। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেশি দামে পণ্য কিনতে হয়, তাই অনেকের সরকার নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রি করা মাঝে মাঝে সম্ভব হয় না। তবে ভোক্তারা বলছেন, সরকার দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পরেও বেশি দামে পণ্য বিক্রি করা অস্বাভাবিক। প্রশাসনের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে অনিয়ম পেলে প্রায় সময় ১–২ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। পরে দেখা যায়, সেই আগের দামেই পণ্য বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, গত ১৩ আগস্ট বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে ১৭৪ টাকা। এছাড়া খোলা সয়াবিনের প্রতি লিটার দাম নির্ধারণ করে ১৫৪ টাকা। তবে বর্তমানে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন প্রতি লিটার ১৭৪ টাকায় বিক্রি হলেও খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৫৯ টাকায়। অপরদিকে পরিশোধিত খোলা চিনি প্রতি কেজি ১৩৫ টাকা থেকে ৫ টাকা কমিয়ে ১৩০ টাকা এবং পরিশোধিত চিনি প্যাকেট ১৪০ টাকা থেকে ৫ টাকা কমিয়ে ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত গত ১৪ সেপ্টেম্বর আলুর খুচরা দাম প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা ও পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা বেঁধে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া ডিমের ডজন ১৪৪ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। তবে বর্তমানে বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকায়, পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৬৫ টাকা এবং ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।
বেসরকারি চাকরিজীবী মোহাম্মদ আবরার ফাহাদ বলেন, সরকার নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। কয়েকটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পরেও আমরা এখনো বাড়তি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে। প্রশাসন নিয়ম রক্ষার অভিযান পরিচালনা করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
কাজীর দেউড়ি মোড়ে কথা হয় দিনমজুর হোসেন আলীর সাথে। তিনি জানান, গত কয়েক মাস ধরে আয় কমে গেছে। উল্টো দিন দিন জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে। সীমিত আয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, আমাদের দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজারে পুরোপুরি ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। ভোগ্যপণ্যের বাজার পাইকারীতে নিম্নমুখী হলেও খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়তে সময় লাগে। তাই পাইকারীতে দাম কমার সরাসরি সুফল সাধারণ ভোক্তারা পান না। কিন্তু দেখা যায়, কোনো পণ্য পাইকারিতে দাম বাড়লে খুচরা ব্যবসায়ীরা সাথে সাথে দাম বাড়িয়ে দেন। এছাড়া সরকার এখন কিছু কিছু পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও সেই নির্ধারণ করে দেয়া দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে না।