বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক ওরফে জিয়া দেশের বাইরে কোথাও পালিয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে মানিকগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বরখাস্ত হওয়া মেজর জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেন দেশে নেই। তারা অন্য দেশে গা ঢাকা দিয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব তাদের ধরে এনে রায় কার্যকর করা হবে। এজন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, অভিজিৎ রায়ের খুনিদের তথ্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে পুরস্কার ঘোষণা করেছে, তা তাদেরকে ধরতে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় সহায়ক হবে বলে মনে করছেন। তারা কোথায়, কোন দেশে আছে, আমরা জানি না। মে বি এটার ফলে আমাদের যে ওদের ধরার প্রচেষ্টা, এটাতে একটু সহায়ক হবে। ধরা যাতে সহজ হয়। খবর বিডিনিউজের।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি একুশের বইমেলা থেকে বের হওয়ার পর অভিজিৎ রায়কে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই সময় চাপাতির আঘাতে তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও আহত হন। হত্যাকাণ্ডের ছয় বছর পর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই মামলার রায় হয়। মামলায় জিয়াসহ পাঁচ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড এবং উগ্রপন্থি ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এদিকে দণ্ডিত দুই পলাতক খুনি কিংবা ছয় বছর আগের ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের তথ্যের জন্য সোমবার ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের আওতাধীন রিওয়ার্ড ফর জাস্টিস (আরএফজে) প্রোগ্রাম বলেছে, হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতরা এখনও বাংলাদেশে রয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পুরস্কার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ওদের বিরুদ্ধে রায় হয়ে গেছে। তারপরও পালিয়ে আছে। এখন যদি এর কারণে ওদের ধরা সম্ভব হয়, দ্যাট ইজ মোস্ট ওয়েলকাম।
র্যাব ও এর সাত সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর কয়েকদিন আগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও অর্থ দপ্তর। এবার বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করল দেশটি। এসবের ফলে সরকার চাপ অনুভব করছেন কিনা-এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, তারা তাদের নিয়মে চলছে। তবে, সরকারিভাবে তারা আমাদের উপরে বিশেষ কিছু করে নাই। তারা তাদের কাজ করছে, আমরা আমাদের কাজ করছি।